মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ আসছে। মালয়েশিয়ার উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ফাধলিনা বিনতে সিদেকের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাত করেন বুধবার (১৩ আগস্ট)। এই সাক্ষাতে ‘গ্র্যাজুয়েট প্লাস’ ভিসা চালুর ইঙ্গিত দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। এই ভিসার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা শেষ করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা স্থানীয় শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কুয়ালালামপুরে ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়ায় মালয়েশিয়ার উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী জামব্রি আবদুল কাদিরের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের আইন, বিচার ও প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, নীতিগতভাবে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ‘গ্র্যাজুয়েট প্লাস’ ভিসা দেয়ার বিষয়ে সম্মতি পাওয়া গেছে। তবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিক কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে বলে জানান তিনি। বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত তারা স্থানীয় শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন, যা এই নতুন ভিসার মাধ্যমে পরিবর্তিত হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এছাড়া, অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী ফাধলিনা বিনতে সিদেকের সঙ্গেও একটি পৃথক বৈঠকে শিক্ষাগত সহযোগিতা বৃদ্ধি, বৃত্তি প্রোগ্রাম বৃদ্ধি এবং দুই দেশের শিক্ষার্থী-শিক্ষক বিনিময় কার্যক্রম সম্প্রসারণের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার পক্ষকে বাংলাদেশি ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্যও অনুরোধ জানান। এসময় শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ক্যাম্পেইন যা দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর লক্ষ্যে কাজ করে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সচিব লামিয়া মোরশেদসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা। অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং দুই দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদারের আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মালয়েশিয়ায় নতুন এই ‘গ্র্যাজুয়েট প্লাস’ ভিসা অনেক প্রত্যাশা জাগাচ্ছে, যা তাদের পড়াশোনা শেষ করে মালয়েশিয়ার কর্মজীবনে প্রবেশের পথ সুগম করবে বলে আশা করা হচ্ছে।