ইসরায়েলের টানা গণহত্যামূলক হামলায় গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৩৩০ জনে। এর মধ্যে ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ২০১ জন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের দৈনিক হালনাগাদ তথ্যে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতলে পৌঁছেছে ৭২ জনের মরদেহ এবং ৩১৪ জন আহত ব্যক্তি। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শুধু গত একদিনে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন আরও চারজন। ফলে দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০১ জনে, যাদের মধ্যে ৯৮ জন শিশু। মন্ত্রণালয় সতর্ক করে জানিয়েছে, বহু হতাহত এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় পড়ে আছেন। কিন্তু তীব্র ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ও সরঞ্জাম ঘাটতির কারণে জরুরি সেবা ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
এদিকে, মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৭২ জনে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন। ২৭ মে থেকে বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এই ধরণের ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ হাজার ২৪৯ জন।
গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি সেনারা আবারও গাজায় হামলা শুরু করে। এই সময়ে তারা ৯ হাজার ৮২৪ জনকে হত্যা করেছে এবং আরও ৪০ হাজার ৩১৮ জনকে আহত করেছে। এই হামলার মাধ্যমে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে যায়।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি, গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি রয়েছে।