ভারতে অবস্থানরত মার্কিন দূতাবাস সম্প্রতি মার্কিন ভিসাধারীদের উদ্দেশ্যে জারি করেছে এক কঠোর সতর্কবার্তা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানায়, মার্কিন ভিসার শর্তাবলী ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকার নির্ধারিত সময় অমান্য করলে তা ভিসা বাতিল, নির্বাসন এবং ভবিষ্যতে ভিসা পাওয়ার অযোগ্যতার মতো কঠিন পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
পোস্টে উল্লেখ করা হয়, আপনারা মার্কিন ভিসার শর্তাবলী এবং যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত থাকার সময়কালকে সম্মান করুন। আই-৯৪-তে নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলে তা গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান ভ্রমণ, পড়াশোনা বা চাকরির ওপর স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে বলেও সতর্ক করে দূতাবাস। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
এই সতর্কবার্তার পরদিনই, সোমবার, রিপাবলিকান দলীয় কংগ্রেসওম্যান মার্জোরি টেলর গ্রিন এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, ভারতীয় এইচ১-বি ভিসা বন্ধ করুন এবং ওবামা/বাইডেন/ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অর্থায়ন ও অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করুন।
একই দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ভারত কেবল বিপুল পরিমাণে রাশিয়ান তেল কিনছে না, বরং তারা তা অধিক মুনাফার বিনিময়ে খোলা বাজারে বিক্রি করছে। এতে ইউক্রেন যুদ্ধের মাধ্যমে রাশিয়ার লাভ হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, ভারত যে শুল্ক দিচ্ছে, তা ‘বিপুল পরিমাণে রাশিয়ান তেল কেনার জন্য’ আরও বাড়ানো হবে। যদিও শুল্কের হার কত বাড়ানো হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
এর আগেও গত সপ্তাহে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হবে। এমনকি ভারতকে একটি ‘অনির্দিষ্ট জরিমানার’ মুখোমুখিও হতে হতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভারতের সরকারি সূত্রগুলো বার্তা সংস্থা রয়টার্স-কে জানিয়েছে, ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখবে। যদিও বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে সূত্রগুলো পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক।
এই অবস্থায় মার্কিন ভিসা সংক্রান্ত কঠোর বার্তা, এইচ১-বি ভিসা নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য এবং রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকে ঘিরে ভারতের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি—সব মিলিয়ে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে চাপ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া