spot_img

ফিলিস্তিন ইস্যু: দ্বিরাষ্ট্র সমাধানে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

অবশ্যই পরুন

ফিলিস্তিন ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, “ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এখন একটি ‘চূড়ান্ত ভাঙন’ বা ‘ব্রেকিং পয়েন্টে’ পৌঁছেছে। দুই রাষ্ট্র সমাধান ভেঙে পড়া পথ। এটা ঠেকাতে জরুরি ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।”

সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনে গুতেরেস ফ্রান্স ও সৌদি আরবকে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এটিকে বক্তৃতা থেকে বাস্তব পদক্ষেপে রূপান্তরের একটি বিরল ও অপরিহার্য সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেন।

গুতেরেস বলেন, ‘আমরা আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি চোখে চোখ রেখে, আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জ তা পুরোপুরি উপলব্ধি করেই। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলছে। কূটনীতি, অসংখ্য প্রস্তাব ও আন্তর্জাতিক আইনকে অগ্রাহ্য করেই তা করা হচ্ছে।’

গুতেরেস জোর দিয়ে বলেন, ‘এই সংকটের স্থায়ীত্ব অবশ্যম্ভাবী নয়। এটি সমাধানযোগ্য— এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সাহসী নেতৃত্ব এবং সত্যের মুখোমুখি হওয়া।’

তিনি বলেন, ‘সত্য হলো আমরা এক বিপজ্জনক মোড়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছি। দুই রাষ্ট্র সমাধান এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও দূরে।’

হামাসের ৭ অক্টোবরের ‘ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা ও জিম্মি নেওয়ার ঘটনা’র তীব্র নিন্দা জানালেও গুতেরেস জোর দিয়ে বলেন, ‘গাজা উপত্যকার যে ধ্বংস বিশ্বজুড়ে প্রত্যক্ষ করা হচ্ছে, তার কোনো ন্যায্যতা থাকতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘গাজার জনসংখ্যাকে অনাহারে রাখা, হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক মানুষকে হত্যা, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের টুকরো টুকরো করে ফেলা, ইসরায়েলি বসতিগুলোর সম্প্রসারণ, দখলদারদের সহিংসতা বৃদ্ধি, ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ধ্বংস ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ, মাটির ওপর জনসংখ্যার গঠনে পরিবর্তন আনা, ভবিষ্যতের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনার অভাব এবং ইসরায়েলের পার্লামেন্ট (কনেসেট)-এর সাম্প্রতিক ঘোষণায় পশ্চিম তীর দখলের প্রতি খোলাখুলি সমর্থন—এগুলোর কোনোটাই গ্রহণযোগ্য নয়।’

গুতেরেস বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলি পশ্চিম তীর দখলের ধীরে ধীরে চলা প্রক্রিয়া অবৈধ। এটি বন্ধ করতে হবে। গাজা ধ্বংসের এই ধারাবাহিকতা সহ্যযোগ্য নয়। এটি বন্ধ করতে হবে। একতরফা যেকোনো পদক্ষেপ, যা দুই রাষ্ট্র সমাধানকে চিরতরে শেষ করে দিতে পারে, তা অগ্রহণযোগ্য। এগুলো বন্ধ করতে হবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এগুলো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি নষ্ট করে দিচ্ছে।’

সম্মেলন যেন ‘শুধু শুভকামনামূলক বক্তৃতা’তে সীমাবদ্ধ না থাকে, সেই আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস বলেন, এটি হওয়া উচিত একটি ‘নির্ণায়ক মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত’, যা দখলদারিত্বের অবসান এবং একটি কার্যকর দুই রাষ্ট্র সমাধানের দিকে অপরিবর্তনীয় অগ্রগতির সূচনা ঘটাবে।

তিনি দুইটি স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক এবং পাশাপাশি থাকা রাষ্ট্র ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন—যারা ১৯৬৭ সালের সীমারেখার ভিত্তিতে এবং জেরুজালেমকে উভয় রাষ্ট্রের রাজধানী করে নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমার মধ্যে শান্তিতে সহাবস্থান করবে—এই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘এটাই একমাত্র কাঠামো, যা আন্তর্জাতিক আইনে ভিত্তি করে গঠিত, এই জাতিসংঘ সভার দ্বারা অনুমোদিত, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থিত। এটিই একমাত্র বাস্তবসম্মত পথ, যা ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে। এবং এটি বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পূর্বশর্ত।’

শেষে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এর জন্য ইসরায়েল, ফিলিস্তিন এবং অন্যান্য পক্ষ থেকে সাহসী ও নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রয়োজন।’

সূত্র: আরব নিউজ

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর ২৫%...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ