ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা বন্ধ হয়নি। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ইউরোপ যদি জাতিসংঘের ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ (অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল) কার্যকর করার চেষ্টা চালায়, তাহলে তারা ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে আর কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। খবর মেহের নিউজের।
গতকাল শনিবার (১২ জুলাই) তেহরানে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিকদের এক সভায় এসব কথা বলেন আরাগচি।
তিনি বলেন, ‘আইএইএ’র সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা চলছেই। ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) প্রতি সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকেছে এবং সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত কাজ করেছে।’
তবে তিনি জানান, ‘এই সহযোগিতার ধরনে পরিবর্তন এসেছে। এখন থেকে আইএইএ’র সঙ্গে সম্পর্ক তদারকি করবে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এসএনএসসি)। সংস্থার যেকোনো অনুরোধ আলাদাভাবে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যেখানে নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
আরাগচি বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্প্রতি হামলার শিকার হয়েছে। ফলে এসব এলাকায় রেডিওঅ্যাকটিভ পদার্থ ছড়িয়ে পড়া কিংবা বিস্ফোরণের ঝুঁকি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে কোনো পরিদর্শক পাঠানোর আগে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কৃতজ্ঞ, কারণ প্রায় ১২০টি দেশ সম্প্রতি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিরোধী আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে।’
আন্তর্জাতিক উত্তেজনা কমাতে তিনি বলেন, ‘এই সংকটের সমাধানে একমাত্র পথ হলো কূটনৈতিক আলোচনা। কিন্তু এর আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে, বিপরীতপক্ষ সত্যিই কূটনীতি চায়—না কি কেবল নিজেদের লক্ষ্য পূরণের জন্য কূটনীতিকে ব্যবহার করছে।’
আরাগচি জানান, ১৫ জুন রোমে ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার ঠিক দুই দিন আগে, ১৩ জুন ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এই ঘটনার পর ইরানের মধ্যে কূটনীতির প্রতি গভীর সন্দেহ তৈরি হয়েছে।