মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদ-এ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্রে। এই হামলা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্ববর্তী দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছে, যেখানে তিনি বলেছিলেন, হামলায় কোনো বড় ক্ষতি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্ল্যানেট ল্যাবসের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, ২৩ জুন সকালের চিত্রে ঘাঁটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিওডেসিক ডোম বা র্যাডোম অক্ষত দেখা গেলেও, ২৫ জুনের ছবিতে সেটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া পাশের ভবনগুলোর ছাদে আগুনে পোড়া দাগ ও ধ্বংসস্তূপও দৃশ্যমান।
এই র্যাডোমের অভ্যন্তরে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি অত্যাধুনিক মডার্নাইজেশন এন্টারপ্রাইজ টার্মিনাল (এমইটি), যার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মার্কিন সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সেনা সদস্যরা নিরাপদ তথ্য আদান-প্রদান করতে পারতেন। অ্যান্টি-জ্যামিং প্রযুক্তিসহ সজ্জিত এই এমইটি সিস্টেমটি ২০১৬ সালে ১৫ মিলিয়ন ডলারে কাতারে স্থাপন করা হয়েছিল, এবং এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রথম এমন সুবিধা।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে জানা যায়, ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতাঞ্জ, ফোরদো ও ইসফাহান শহরের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে একতরফা বিমান হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে, পরদিন ২৩ জুন, ইরান কাতারের আল-উদেইদ ঘাঁটিতে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরান এই প্রতিরোধমূলক অভিযানকে “অপারেশন টিডিংস অব ভিক্টরি” নামে আখ্যা দিয়েছে।
এ দিকে, মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষণভিত্তিক ওয়েবসাইট দ্য হিল তাদের এক মতামত নিবন্ধে আল-উদেইদ ঘাঁটি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, ঘাঁটি এখন কেবল সামরিক নয়, বরং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বোঝায় পরিণত হয়েছে।
সাবেক ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড প্রধান জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি-র একটি রিপোর্টের বরাতে নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ইরানের ধারাবাহিক আক্রমণে এই ঘাঁটি ভবিষ্যতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে।
সূত্র: প্রেস টিভি