আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তরুণ ভোটারদের রাজনৈতিক পছন্দ নিয়ে দক্ষিণ এশীয় গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত যৌথ জরিপে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।
‘ইউথ ইন ট্রানজিশন’ শীর্ষক এই জরিপে দেশের ৮টি বিভাগের শহর ও গ্রাম অঞ্চলের ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী প্রায় ২ হাজার তরুণ-তরুণীর মতামত নেওয়া হয়।
২০২৫ সালের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পরিচালিত এই জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ৩৮.৭৬ শতাংশ তরুণ ভোটার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-কে ভোট দিতে চান।
তরুণ ভোটারদের মধ্যে ২১.৪৫ শতাংশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া সদ্য গঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-কে সমর্থন করছেন ১৫.৮৪ শতাংশ তরুণ ভোটার।
জরিপে অংশ নেওয়া তরুণদের ৭৬.৭৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে ইচ্ছুক। তবে রাজনীতিতে সরাসরি অংশগ্রহণের বিষয়ে তাদের আগ্রহ তুলনামূলক কম।
জরিপ অনুযায়ী, ৮২.৭ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তারা রাজনীতিতে যুক্ত হতে চান না। তাদের অনাগ্রহের পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে রাজনৈতিক সহিংসতা ও রাজনীতিবিদদের নৈতিকতার অভাব।
জরিপটি দেশের আট বিভাগের প্রতিটি থেকে দুইটি জেলা এবং প্রতিটি জেলার দুইটি উপজেলা নিয়ে পরিচালিত হয়। এতে তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক মনোভাব পর্যালোচনা করা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারী তরুণদের মতে, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং কর্মসংস্থানের অভাব অন্যতম ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এ বিষয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান জানান, “জরিপটি মূলত ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই জরিপের ফলাফল শুধুমাত্র তরুণ অংশগ্রহণকারীদের মতামত উপস্থাপন করে; এটি দেশের পূর্ণাঙ্গ জনমত নয় এবং অন্যান্য বয়সসীমার নাগরিকদের প্রতিফলনও নয়।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “জরিপের ফলাফল ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতা ও সতর্কতা প্রয়োজন, যেন কোনো ভুল ব্যাখ্যা বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়।”