সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের তিন ফরম্যাটেই অধিনায়ক ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে নিজের ব্যাটিংয়ে বাড়তি নজর দিতে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। সম্প্রতি ওয়ানডে ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে শান্তকে সরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার গুঞ্জন উঠছে, টেস্ট দলের অধিনায়কের পদও ছাড়তে যাচ্ছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পর সাদা পোশাকে অধিনায়ক থাকছেন না শান্ত। এই সফর শেষেই নিজের সিদ্ধান্ত বোর্ডকে জানাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় টেস্ট শেষে জানানো হবে, নাকি পরে কার্যকর হবে, সেটা নির্ভর করছে বোর্ডের সঙ্গে তার আলোচনার ওপর।
গত শনিবার বিসিবির এক সূত্র ক্রিকবাজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার পর শান্ত নিজের সিদ্ধান্তে বেশ দৃঢ়। সূত্রের ভাষ্য, ‘আমার মনে হয় না শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর শান্ত অধিনায়কত্ব চালিয়ে যাবেন। আমি ওকে অনেকদিন ধরে চিনি। ওর সঙ্গে যা ঘটেছে, তাতে ও খুব একটা খুশি নয়—এটাই আমার ধারণা।’
ক্রিকবাজের প্রতিবেদনের ভাষ্য, শান্ত একসময় সব ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন, কিন্তু তৎকালীন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদই টেস্ট ও ওয়ানডে দলে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেন। কেবল টি-টোয়েন্টি ছেড়ে দিতে বলেন, ব্যাটিংয়ে মনোযোগ বাড়ানোর স্বার্থে। তবে গত ১২ জুন শান্তকে না জানিয়েই ওয়ানডেতে নতুন অধিনায়ক করা হয় মেহেদি হাসান মিরাজকে।
জানা গেছে, বিসিবি পরিচালকদের এক জরুরি জুম বৈঠক শেষেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্রিকবাজ তাদের খবরে উল্লেখ করেছে, এই সিদ্ধান্তের সময়ে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে দল নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল শান্ত। কিন্তু ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিমের ফোনকলের পর শান্ত আর সিমন্সের সঙ্গে বৈঠক করেননি।
বোর্ডের সূত্রগুলোর দাবি অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত শান্তর জন্য ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কারণ তিনি আগামীতেও ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং শ্রীলঙ্কা সফর ঘিরে কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে আলোচনায় নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ওয়ানডে দলের কাঠামোর প্রেক্ষাপটে খেলোয়াড়দের তাদের ভূমিকা সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছিলেন।
যদিও নতুন বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল পরবর্তীতে বলেছিলেন, শান্তর অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়নি। বরং বোর্ডের সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনকি শান্ত নিজেও খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতায় এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছিলেন বোর্ড সভাপতি।