spot_img

ঈদযাত্রায় ১২ দিনে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩১২

অবশ্যই পরুন

এ বছর ঈদযাত্রার ১২ দিনে (৩ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত) দেশে ৩৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১২ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৭ জন।

এ সময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন। ৩২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৮ জুন) সকালে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ২০২৪ সালের ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৩ দিনে ২৬২ জন নিহত হয়েছিলেন। প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ২০ দশমিক ১৫ জন। এ বছর প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছেন ২৬ জন। এই হিসাবে গত বছরের তুলনায় প্রাণহানি বেড়েছে ২৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৬ হাজার টাকার মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এবারের ঈদযাত্রায় ১২১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৭ জন, যা মোট নিহতের ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৪৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩৬টি (৩৯ দশমিক ১৯ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১২১টি (৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৩৪টি (৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে এবং ৫৬টি (১৬ দশমিক ১৩ শতাংশ) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে- ৮১টি (২৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬৩টি (৪৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৪৬টি (১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৫১টি (১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ছয়টি (১ দশমিক ৭২ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারি পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১১৬টি দুর্ঘটনায় ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ফরিদপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি ২৭টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। এখানে কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি।

এবারের ঈদযাত্রায় ঢাকায় ৩৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত ও ৫৩ জন আহত হয়েছেন।

ঈদযাত্রা ও দুর্ঘটনা পর্যালোচনায় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদ উদযাপনের সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে। বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ৯ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ২০ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর।

দুর্ঘটনায় তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ঈদুল আজহায় রাজধানী ঢাকা থেকে কম-বেশি ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছেন এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছেন। ঈদের আগে ঘরমুখী যাত্রায় ছুটি কম থাকায় একসঙ্গে বহু মানুষের যাত্রার কারণে যানবাহনের ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষ বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পিকআপে, ছোট ও স্বল্পগতির নানা প্রকার অনিরাপদ যানবাহনে যাত্রা করেছে। এই অবস্থা ঈদের ফিরতি যাত্রাতেও অব্যাহত ছিল।

সড়ক অবকাঠামোর বেহাল দশার কথা উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে।

এতে বলা হয়েছে, বৃষ্টিতে সড়ক নষ্ট হওয়ার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এবং সড়কে দাঁড়ানো ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিয়ে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় হতাহত বেশি হয়েছে। যানবাহনের চাকা ফেটে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের চলছিল পরমাণু আলোচনা, তখনই ইসরায়েলের হামলা: খামেনি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি নিয়ে ইরানের আলোচনা। ঠিক সে সময়ে ইসরায়েলের চালানো সামরিক অভিযানের কঠোর সমালোচনা করেছেন ইরানের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ