spot_img

অতিরিক্ত ভাবনা? মুক্তি পেতে জাপানের ৫ কৌশল

অবশ্যই পরুন

বর্তমান ব্যস্ত জীবনে অধিকাংশ মানুষ মানসিক চাপ, অনুশোচনা এবং ভবিষ্যতের চিন্তায় ভুগছেন। এর ফলস্বরূপ, আমরা অতিরিক্ত ভাবনায় ডুবে গিয়ে জীবনের আসল আনন্দ ও মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলি। এমন অবস্থায়, জাপানের কিছু প্রাচীন এবং সময়পরীক্ষিত পদ্ধতি মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।

নিচে থাকছে এমন ৫টি জাপানি পদ্ধতি, যা অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা কমিয়ে সজাগ, মননশীল জীবনধারার পথে নিয়ে যেতে পারে।

১. জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজা (ইকিগাই) 

‘ইকিগাই’ শব্দটির অর্থ হলো ‘জীবনের কারণ’। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে আপনার ভালোবাসা, দক্ষতা, সমাজের চাহিদা এবং জীবিকার সম্ভাবনা সব একত্রিত হয়। যখন কেউ নিজের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পায়, তখন স্বাভাবিকভাবেই অনর্থক চিন্তা হ্রাস পায় এবং মন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কেন্দ্রীভূত হয়।

২. প্রকৃতির মাঝে মানসিক বিশ্রাম (শিনরিন-ইয়োকু)

শিনরিন-ইয়োকু মানে ‘ফরেস্ট বাথিং’ বা ‘বনে গোসল করা’। এটি একটি মানসিক বিশ্রাম প্রক্রিয়া যেখানে প্রকৃতির মাঝে ধীরে চলা, গভীরভাবে শ্বাস নেয়া ও ইন্দ্রিয় দিয়ে পরিবেশ উপলব্ধি করাই মূল উদ্দেশ্য। এই প্রক্রিয়া কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) হ্রাস করে ও মস্তিষ্ককে শান্ত করে। স্মার্টফোন থেকে দূরে থেকে প্রকৃতির মাঝে কিছু সময় কাটানো মানসিক শান্তির চাবিকাঠি হতে পারে।

৩. ধারাবাহিক আত্মোন্নয়ন (কাইজেন)

‘কাইজেন’ অর্থ ধারাবাহিক উন্নতি। এটি শেখায় যে বড় পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং ছোট ছোট ধাপে নিয়মিত উন্নতির মাধ্যমেই সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। অতিরিক্ত ভাবনা অনেক সময় আসে নিখুঁত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাপে। কাইজেন শেখায় ছোট পদক্ষেপেই পরিবর্তন সম্ভব। প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নতির দিকে এগোলে মানসিক চাপ কমে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

৪. অপূর্ণতাকে গ্রহণ করা (ওয়াবি-সাবি) 

ওয়াবি-সাবি হলো জাপানি এক দার্শনিকতা, যা অসম্পূর্ণতা ও ক্ষণস্থায়ীতার মধ্যেও সৌন্দর্য খোঁজার শিক্ষা দেয়। এটি আমাদের শেখায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে বর্তমানকে গ্রহণ করতে ও উপভোগ করতে। অতিরিক্ত ভাবনার পেছনে থাকে সবকিছু নিখুঁত করার চাহিদা। ওয়াবি-সাবি এই ধারণাটিকেই চ্যালেঞ্জ করে জীবন যেমন চলছে, তাকে ভালোবেসে উপভোগ করাই শান্তির আসল উপায়।

৫. সচেতন উপস্থিতি (জানশিন)

জানশিন মানে ‘সতর্ক মন’ বা ‘সচেতন উপস্থিতি’। এটি মূলত মার্শাল আর্ট থেকে এসেছে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তে নিজেকে কেন্দ্রীভূত রাখা হয় কর্মের পূর্বে, সময়ে এবং পরে। বর্তমান মুহূর্তে পুরোপুরি উপস্থিত থাকার অভ্যাস তৈরি হলে মন অতীতে বা ভবিষ্যতে ভ্রমণ কম করে। জানশিন এই মুহূর্তেই বাঁচতে শেখায়, যা অতিরিক্ত চিন্তা হ্রাসে অত্যন্ত কার্যকর।

জাপানি এই জীবনদর্শনগুলো আমাদের শেখায় যে জীবনের গতি যতই দ্রুত হোক না কেন, মনকে শান্ত রাখা সম্ভব। অতিরিক্ত ভাবনার জালে আটকে না থেকে যদি আমরা এই কৌশলগুলো চর্চা করি, তাহলে ধীরে ধীরে আরও শান্ত, পরিপূর্ণ ও অর্থবোধক জীবনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সর্বশেষ সংবাদ

ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে ফ্যাসিস্টরা সুযোগ নেবে: এ্যানি

দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর মধ্যে ফাটল ধরানোর কোনও সুযোগ দেয়া যাবে না। ফ্যাসিস্টরা কিন্তু...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ