সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, গোরখোদক মনু মিয়ার একটি খবর নজরে আসে অভিনেতা খায়রুল বাসারের। তিনি জানতে পারেন, ৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া মনু মিয়ার ঘোড়াটি মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
এ খবর পেয়ে গতকাল সোমবার একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, মনু মিয়াকে আমি ঘোড়া কিনে দিতে চাই। বিনিময়ে আমার কবর খোঁড়া পর্যন্ত আল্লাহ উনাকে বাঁচিয়ে রাখুন। কেউ যদি মনু মিয়ার সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন, কৃতজ্ঞ থাকব।
পরে সোমবার রাতেই হাসপাতালে তার সঙ্গে দেখা করেন খায়রুল বাসার। এরপর মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে তার সঙ্গে আলোচনার অনুভূতি শেয়ার করেন। তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
খায়রুল বাসার লিখেছেন– মনু চাচা দোয়া ছাড়া কিছু চান না আপনাদের কাছে। উনি আপনাদের জন্য দোয়া করেন—আপনারা ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।
মনু চাচা বললেন, ঘোড়ার জন্য তার কষ্ট নেই। কষ্ট নেই, কারা তার ঘোড়াকে হত্যা করেছে তা নিয়েও। মনু চাচা মনে করেন, তার ঘোড়ার সাথে তার যাত্রা এ পর্যন্তই রাখলেন আল্লাহ। ঘোড়াটার কপালে আল্লাহ সময়সীমা এভাবেই নির্ধারণ করেছিলেন। বললেন, ‘সে মারা গেছে তো চোখে দেখি নাই, তাই কষ্ট যেটুকু হবার তাও হচ্ছে না।’
তিনি আরও লেখেন, মানুষের বাইক-সাইকেলের শখ থাকে। আমি যতোটা বুঝলাম, উনার শখ ছিল হাতেম তাঈ হওয়া—মানুষের প্রয়োজনে ঘোড়ার পিঠে চড়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছে যাওয়া। উনি উনার সাধ্যের মধ্যে সবচেয়ে মহৎ কাজটিই করে গেছেন আজীবন। উনি সুস্থ হয়ে আবার উনার শখের কাজে ফিরতে চান দ্রুত। আপনাদের দোয়ায় নিশ্চয়ই আল্লাহ উনাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলবেন।
কারও কাছ থেকে কিছু নিতে চান না উল্লেখ করে খায়রুল বাসার জানান, উনি কারো কাছে ঘোড়া চান না, দোয়া চান। উনার কারো প্রতি অভিযোগ বা অনুযোগ নেই। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে প্রয়োজনে সাতটা ঘোড়া কিনতে পারবেন বলেছেন। যা হবার হয়ে গেছে, আল্লাহ যা নির্ধারণ করতে চান, তাই হবে। উনি মনে করেন—সবই নসিব।