‘আমরা যেন আলাদা না করি– জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া বা সাউথ আফ্রিকা… প্রতিটি ম্যাচই আন্তর্জাতিক ম্যাচ’– সিরিজ শুরুর আগে এমন কথাই বলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জিম্বাবুয়ে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এমন একটা আভাসও দিয়ে রেখেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাঠের ক্রিকেটে তার দলের সতীর্থরা যেন সেই কথার মান রাখতেই বেশ ব্যস্ত। টেস্টের প্রথম দিনে শীর্ষ ব্যাটারদের প্রত্যেকেই হতাশ করেছেন দর্শকদের। ব্লেসিং মুজারাবানি-ওয়েলিংটন মাসাকাদজাদের বোলিং তোপে চা বিরতির পর শেষ স্বাগতিকদের ইনিংস।
সবশেষ ২০০১ সালে এমন এক দিন দেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ঢাকায় সেদিন বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল স্রেফ ১০৭ রানে। এরপর আর কখনোই দেশের মাটিতে রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অন্তত ২০০ এর নিচে অলআউট হয়নি টাইগাররা। দুই যুগ পর এসে সেই অতীতে ফিরে গেল শান্ত মিরাজরা। সিলেটে খামখেয়ালি ব্যাটিংয়ের চূড়ান্ত রূপ দেখিয়ে ৬১ ওভারে মাত্র ১৯১ রানেই গুটিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। এক মুমিনুল হকের ফিফটি ছাড়া কেউই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।
রোববার (২০ এপ্রিল) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের ইনিংসের শুরুটা অবশ্য ছিল হতাশাজনক। প্রথম ঘণ্টাতেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। মাত্র ৩২ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এরপর ধৈর্য আর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটিতে প্রথম সেশন আর বিপদ হতে দেননি।
তবে মধ্যাহ্নভোজের পর দলীয় ৯৮ রানে শান্তর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুমিনুলের সঙ্গে শান্তর ৬৬ রানের জুটি ভাঙেন জিম্বাবুয়ের পেসার মুজারাবানি। নাজমুল হোসেন শান্ত ৪০ করে মুজারাবানির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তবে ফিফটি তুলেই থামেন মুমিনুল। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান আক্রমণাত্নক হতে গিয়ে মাসাকাদজাকে মেরে খেলতে গিয়ে মাধেভেরের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। সাজঘরে ফেরার আগে ১০৫ বলে ৮ বাউন্ডারি ও এক ছক্কার সৌজন্যে ৫৬ রান করেন মুমিনুল।
অবশ্য মুমিনুলের বিদায়ের আগে আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহিমও (৪)। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার সহজ বলে বাজে শটে আউট হলেন বাংলাদেশের সফলতম টেস্ট ব্যাটসম্যান। এরপর ১ রানে ফেরেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ১৪৬ রানে আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠা তাইজুল ফিরে গেলে বড় স্কোরের সম্ভাবনাও মিলিয়ে যায় বাংলাদেশের জন্য। স্কোরবোর্ড ভদ্রস্থ করার কাজটা এরপর করেছেন হাসান মাহমুদ এবং জাকের আলী অনিক। ৮ম উইকেটে দুজনের জুটি ৪১ রানের।
কিন্তু ব্লেসিং মুজারাবানির কাছে হার মানতে হয় তাকে। সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ১৯ রান করে। দলের স্কোর ১৮৭। বাংলাদেশ ইনিংসের শেষটা করেন ওয়েসলি মাধেভেরে। দলীয় ১৯১ রানে জাকের আলী অনিক এবং নাহিদ রানা ফেরেন চার বলের ব্যবধানে। মুজারাবানি ও মাসাকাদজা পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ২টি করে উইকেটে নিয়াগুচি এবং মাধেভেরের।