ক্রিকেটের যেকোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের স্বত্ব ভারত কিংবা পাকিস্তান পেলেই আসর শুরুর কয়েক আগে থেকেই তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা ও বিতর্ক।
যেমনটা চলমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে দেখা গিয়েছিলো। আয়োজক পাকিস্তান হওয়ায় সেখানে খেলতে যেতে আপত্তি জানায় ভারত। তারপর কয়েক মাস নাটকীয়তার পর তাদের জন্য হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করা হয় টুর্নামেন্টটি। পাশাপাশি সেই সময় পাকিস্তানও আইসিসিকে শর্ত দিয়ে ভারত কোনো টুর্নামেন্ট বসলে তারাও খেলতে যাবেন না, ব্যবস্থা করতে হবে হাইব্রিড মডেলে।
সেজন্য এই দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে বিতর্ক এড়াতে আগে থেকেই ভিন্ন পথে হাঁটার পরিকল্পনা করছে এসিসি।
এসিসির পূর্বঘোষিত রোডম্যাপ অনুসারে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বসার কথা রয়েছে এশিয়া কাপের ১৭তম আসর। টি২০ ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টুর্নামেন্টটির এবারের আয়োজক ভারত। তবে তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আর সব শেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে ভেন্যু নিয়ে সৃষ্ট নাটকীয়তা দেখে ভারত থেকে সরিয়ে কোনো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে এসিসি। সম্ভাব্য আয়োজক দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিবেচনা করা হচ্ছে। যদিও এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
যদিও এই সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত আয়োজক বিসিসিআই অর্থাৎ ভারতকেই বিবেচনা করা হবে। এর আগে ২০২৩ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হওয়া এশিয়া কাপের আয়োজক ছিলো পাকিস্তান। বিসিসিআই সেবারও খেলতে যেতে আপত্তি জানিয়েছিলো। তাই পরে এসিসি বাধ্য হয়েই হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে হয়েছিলো এসিসির। তাই এবার আগেই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যদি বিসিসিআই বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আয়োজক হয়, তাহলে টুর্নামেন্ট নিরপেক্ষ স্থানে অনুষ্ঠিত হবে।
এর মূল কারণ হলো ভারত ও পাকিস্তানের একে অপরের দেশে খেলতে অস্বীকৃতি, যা সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও দেখা গেছে। বর্তমানে ভারতীয় দল দুবাইতে হাইব্রিড মডেলে খেলছে, ফলে পিসিবিও আগামী বছরের টি২০ বিশ্বকাপের জন্য একই ব্যবস্থা দাবি করেছে, যেই আসরটি বিসিসিআই ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট যৌথভাবে আয়োজন করবে। এ দিকে ভারত থেকে এশিয়া কাপ শেষ অবধি আসলেও সরানো হয় তাহলে বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে এসিসিকে। যেমন সেপ্টেম্বরের গরম আবহাওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তবে যেহেতু এটি টি২০ ফরম্যাটে হবে, তাই সন্ধ্যার অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা পরিবেশে ম্যাচ আয়োজন সম্ভব হবে।
এর আগে আসরগুলো ছয় দল নিয়ে হলেও এবারের আসরে দুটি দল বাড়ানো হয়েছে। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া আটটি দল হলো- ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ওমান, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সবশেষ আসরে খেলা নেপাল এবারের আসরে জায়গা করে নিতে পারেনি। প্রতিবারের মতো দলগুলোকে দুই গ্রুপে বিভক্ত হবে, যেখানে ভারত ও পাকিস্তান একই গ্রুপে থাকবে। গ্রুপ পর্ব থেকে শীর্ষ দুই দল সুপার ফোর পর্বে যাবে, এরপর সেরা দুই দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান এশিয়া কাপ চক্র (২০২৩-২০৩১) অনুযায়ী চারটি আসর নির্ধারিত হয়েছে। ২০২৫ সালে ১৯ ম্যাচের একটি আসর হবে, ২০২৭ সালে বাংলাদেশে হবে ওয়ানডে ফরম্যাটে ১৩ ম্যাচের এশিয়া কাপ। এরপর ২০২৯ সালে পিসিবির আয়োজনে কিন্তু নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টি২০ ফরম্যাটের আরেকটি আসর হবে, এবং ২০৩১ সালে শ্রীলঙ্কায় হবে ১৩ ম্যাচের ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপ।