ইসলামের দৃষ্টিতে যেসব পাপকে জঘন্যতম বিবেচনা করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো, বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক। এটি মানুষের চরিত্র হরণ করে, বংশের পবিত্র নষ্ট করে এবং দুনিয়া-আখিরাতে বিভিন্ন কঠিন শাস্তির উপযুক্ত করে দেয়। এজন্য মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এ কাজ থেকে বিরত থাকার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩২)
এটি এতটাই জঘন্য কাজ যে, নবীজি (সা.) এই কাজকে ঈমানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ব্যভিচারী ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত থাকাবস্থায় মুমিন থাকে না…। (মুসলিম, হাদিস : ১০৬)
নাউজুবিল্লাহ, যদি সেই অবস্থায় কারো মৃত্যু চলে আসে, তাহলে তার দুনিয়া-আখিরাতের কী পরিণতি হবে তা ভাবা উচিত। কেউই জানে না তার মৃত্যু কখন হবে, যদি এরকম কাজে লিপ্ত অবস্থায় মৃত্যুর ফেরেশতা হাজির হয়ে যায়, এর জন্য দুর্ভাগ্য আর কিছুই থাকতে পারে না। কারণ যেসব পাপ আল্লাহকে অধিক ক্রোধান্মিত করে, বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক তার অন্যতম। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সবচাইতে বড় পাপ কোনটি? তিনি বলেন, তোমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাকের সাথে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা। আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বলেন, তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করা যে, সে তোমার সঙ্গে খাদ্যে শরীক হবে। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া। (নাসায়ি, হাদিস : ৪০১৩)
সমাজে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বেড়ে গেলে গোটা সমাজের ওপর আসমানি আজাব নেমে আসে। সামগ্রিক ভাবে সবাইকে এর কুফল ভোগ করতে হয়। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এই উম্মতের শেষ পর্যায়ে ভূমিধস, শারীরিক অবয়ব বিকৃতি ও পাথর বর্ষণের শাস্তি নিপতিত হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) ! আমাদের মাঝে সেলাক বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমাদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে? তিনি বলেন, হ্যাঁ, যখন ঘৃণ্য পাপাচারের প্রকাশ ও ব্যাপক প্রসার ঘটবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২১৮৫)
তাই আমাদের উচিত, নিজেরাও এ ধরনের জঘন্য পাপ থেকে বিরত থাকা এবং অন্য কেউ এ ধরনের লিপ্ত হয়ে গোটা সমাজের ওপর যাতে আজাব ডেকে না আনে সে জন্য সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা। মহান আল্লাহ সবাইকে সব ধরনের পাপ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।