spot_img

অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২৮ শতাংশ

অবশ্যই পরুন

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে গত বছরের ৮ আগস্ট শপথ নেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) পাঠানোর বিশেষ আহ্বান জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে প্রবাসীরাও রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।

হিসেব মতে, ড. ইউনূসের সরকারের সময়ে গত ছয় মাসে (আগস্ট ২০২৪ সাল থেকে জানুয়ারি ২০২৫ সাল) প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন এক হাজার ৪০৪ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের (আগস্ট ২০২৩ সাল থেকে জানুয়ারি ২০২৪ সাল) তুলনায় গত ছয় মাসে বেড়েছে ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। প্রবাসী আয়ের এমন বৃদ্ধিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পতন থামানো সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি ইতিবাচকভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে গেছে রিজার্ভ।

গত জুলাই শেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, বিপিএম৬ হিসেবে দেশে রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৩৯ কোটি ডলার। মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৫৮২ কোটি ডলার। সেখান থেকে কমে গত সেপ্টেম্বরে বিপিএম৬ হিসেবে দেশে রিজার্ভ হয়েছিল এক হাজার ৯৮৬ কোটি মার্কিন ডলার। মোট রিজার্ভ হয়েছিল দুই হাজার ৪৮৬ কোটি ডলার। পরের মাসে রিজার্ভ পতন কমে আসে। পরবর্তীতে রিজার্ভ বাড়তে থাকে।

এরই ধারায় গত ডিসেম্বরে বিপিএম৬ হিসেবে দেশে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছিল দুই হাজার ১৩২ কোটি মার্কিন ডলার। মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৬২১ কোটি ডলার। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিলের কারণে যদিও রিজার্ভ কিছুটা কমে এসেছে। তারপরও গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিপিএম৬ হিসেবে দেশে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২০ কোটি ডলারে। আর মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৫৪০ কোটি ডলার।

প্রবাসী আয় হলো দেশের ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ বা কোনো দায় পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ে ডলার এলে তা দিয়ে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে ডলার ব্যয় হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ডলারের দরকার হয়। তাই প্রবাসী আয় যত বাড়বে দেশে ডলারের সংকট তত কমবে।

দেশের শীর্ষ চার ব্যাংকের ছয় কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গত ছয় মাসে (আগস্ট থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত) প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যা আগের অর্থবছরের (আগস্ট থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত) ছয় মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ২৮ শতাংশের বেশি। এর প্রভাবে দেশের রিজার্ভ কমার গতিও রোধ হয়ে এখন উত্থানের দিকে এগিয়ে এসেছে।

ব্যাংকাররা আরও বলেন, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৯৭৩ কোটি ডলার। সেখান থেকে কমতে কমতে গত জুলাইয়ে মোট রিজার্ভ হয়েছিল দুই হাজার ৫৮২ কোটি ডলার। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও রিজার্ভ কমেছিল। গত সেপ্টেম্বরে মোট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৪৮৬ কোটি ডলার। সেখান থেকে এখন রিজার্ভ ইতিবাচকভাবে বাড়ছে। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রিজার্ভে উত্থান ঘটে। দেশের এই অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে রিজার্ভ বৃদ্ধির দিকে এসেছে। এটা সুখবর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বৈধ পথে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বাড়ায় দেশে প্রবাসী আয় বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের গত ছয় মাসে (আগস্ট থেকে জানুয়ারি) প্রবাসী আয় এসেছে এক হাজার ৪০৪ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) একই সময় (আগস্ট থেকে জানুয়ারি) প্রবাসী আয় এসেছিল এক হাজার ৯৩ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এই সময়ের মধ্যে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩১০ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার বা ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশ।

গত অর্থবছরের (২০২৩-২০২৪) আগস্টে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ ডলার। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৫) আগস্টে প্রবাসী আয় এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে গত আগস্টে প্রবাসী আয় বেড়েছিল ৬২ কোটি ৪৭ লাখ ডলার বা ৩৯ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ।

আগের অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ ডলার। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে গত সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছিল ১০৬ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার বা ৮০ দশমিক ১৭ শতাংশ।

গত অর্থবছরের অক্টোবরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে গত অক্টোবরে প্রবাসী আয় বেড়েছিল ৪২ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের নভেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৩ কোটি ৪০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে গত অক্টোবরে প্রবাসী আয় বেড়েছিল ২৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা ১৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ।

এ ছাড়া গত অর্থবছরের ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৯ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে গত ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় বেড়েছিল ৬৪ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার ডলার বা ৩২ দশমিক ৫২ শতাংশ।

আগের অর্থবছরের জানুয়ারি প্রবাসী আয় এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় এসেছে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে গত জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় বেড়েছে সাত কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার ডলার বা তিন দশমিক ৪১ শতাংশ।

প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সচেতনতা বাড়ানোর কারণে হুন্ডি বা অবৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা কমেছে। এতে এখন প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে দেশের রিজার্ভ বেড়েছে। এখন মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৫৩১ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

রিজার্ভের পতন থামানোর বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিভিন্ন প্রচেষ্টায় অর্থপাচার অনেকটাই রোধ করা গেছে। পাশাপাশি প্রবাসী আয় বাড়ার কারণে আন্তঃব্যাংকে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। যার ফলে রিজার্ভ বাড়ছে।

একই বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশীয় শিল্পের বিকাশে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের প্রবাসী আয় বাড়ছে। পাশাপাশি বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

গত সাত মাসের প্রবাসী আয়:

জুলাই : দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে রেমিট্যান্স আসা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছিল। গত জুলাইয়ে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের বছরের (২০২৩ সাল) জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। এই সময়ের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কম এসেছিল ছয় কোটি ৪১ লাখ ডলার বা তিন দশমিক ২৫ শতাংশ। এদিক গত ১৪ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত (১৪ দিন) দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে প্রতিদিন গড়ে এসেছিল চার কোটি ২০ লাখ ডলার। জুলাইয়ের প্রথম ১৩ দিনে প্রবাসী আয় এসেছিল ৯৭ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। মাসটির প্রথম ১৩ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল সাত কোটি ৫২ লাখ ডলার। জুলাইয়ে শেষ চার দিনে (২৮ থেকে ৩১ জুলাই) প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৪ কোটি ১৬ লাখ ডলার। শেষ চার দিন প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল আট কোটি ৫৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত ৩১ জুলাই প্রবাসী আয় এসেছে ১২ কোটি ডলার। যা আগের মাস জুনে ছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ ডলার। জুনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল আট কোটি ৫৪ লাখ ডলার। গত বছরের জুলাইয়ে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। মাসটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ছয় কোটি ৩৬ লাখ ডলার। গত জুনে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় পেয়েছিল দেশ। এক মাস না যেতে প্রবাসী আয়ে উল্টোচিত্র দেখা যায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাইয়ে পাঁচ দিন (১৯ থেকে ২৩ জুলাই) ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছিল। প্রবাসী আয়ের এই নেতিবাচক প্রভাব দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি হয়েছিল। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন কৌশলে যেকোনো মূল্যে প্রবাসী আয় বাড়াতে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার গত ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ জারি করে। এর ফলে গত ২৩ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। এ সময় ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেন পুরো বন্ধ ছিল। দীর্ঘ বন্ধের পর গত ২৪ জুলাই থেকে ব্যাংকের কার্যক্রম চালু হয়। অবশ্য সেইদিন ব্যাংকের লেনদেন চলে ৪ ঘণ্টা (বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত)। ব্যাংক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পাঁচ দিন (১৯ থেকে ২৩ জুলাই) ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় আসা সম্ভব ছিল না। এতে ১৪ দিনে (১৪ থেকে ২৭ জুলাই) প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ে। তবে মাসটির শেষ চার দিনে প্রবাসী আয় বেড়েছিল। মাসটির শেষ চার দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৪ কোটি ১৬ লাখ ডলার।

আগস্ট : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর তিনদিন পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর থেকে প্রবাসী আয়ের পালে লাগে হাওয়া। সেই হাওয়ায় গত আগস্টে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। গত বছর (২০২৩) একই সময় (আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সে হিসাবে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬২ কোটি ১৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার বা ৩৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। অবশ্য আগস্টের প্রথম ১০ দিনে  (১ থেকে ১০ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ৪৮ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। পরের ৭ দিনে  (১১ থেকে ১৭ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ৬৫ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। পরের ৭ দিনে (১৯ থেকে ২৪ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছিল ৫৮ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার। মাসটিতে শেষ ৭ দিনে (২৫ থেকে ৩১ আগস্ট) প্রবাসী আয় এসেছে ৫০ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার। যেখান আগের মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আগস্টে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৭৫ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সাত কোটি ৮১ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে আগস্টে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় ৪০ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছিল। আর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ট্রাস্ট ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছিল ২৯ কোটি তিন লাখ ১০ হাজার ডলার। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ কোটি ৬৬ লাখ ২০ হাজার ডলার, জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৬২ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ছয় লাখ ৫০ হাজার ডলার এসেছিল।

সেপ্টেম্বর : গত সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এটি দেশের ইতিহাসে কোনো একক মাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। সেপ্টেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬৫ কোটি তিন লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ৬৩ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ১০ হাজার ডলার। দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সেপ্টেম্বর একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এই ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ৪০ কোটি ২৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছিল ৩২ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার ডলার। এরপর ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছিল ২৪ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার, রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৩৭ লাখ ডলার এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি  ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

অক্টোবর : গত অক্টোবরে প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। মাসটিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৪ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ৭২ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ৯৯ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ৭১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে অক্টোবরে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ৪৩ কোটি ১৪ লাখ ৯০ হাজার ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে আসা অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছিল ২৬ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এরপর জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছিল ১৯ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছিল ১৪ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার ডলার।

নভেম্বর : গত নভেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ডলার। এর আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ সময়ের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছিল ১৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ। নভেম্বরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছিল ১২২ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছিল ৮২ কোটি ৪২ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। মাসটির ২৪ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছিল ৪৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। ১৭ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৭ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার ডলার। ১০ থেকে ১৬ নভেম্বর দেশের প্রবাসী আয় এসেছিল ৬০ কোটি ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার। নভেম্বরের ৩ থেকে ৯ তারিখের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬১ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ১ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৪ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

ডিসেম্বর : গত ডিসেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। গত ২০২০ সালের জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার। যা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দ্বিতীয় প্রবাসী আয়ের রেকর্ড। তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড গত বছরের জুনে। এই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ রেকর্ড গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

জানুয়ারি : বিদায়ী জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় এসেছে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। মাসটিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৫ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোর মধ্যে জানুয়ারিতে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এই ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় ২৮ কোটি ২২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এসেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে আসা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৭ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ২৭ লাখ ১০ হাজার ডলার, ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার এবং অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ১০ হাজার ডলার। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিপিএম৬ হিসেবে দেশে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২০ কোটি ডলারে অবস্থান করেছে। মোট রিজার্ভ দুই হাজার ৫৪০ কোটি ডলার।

সর্বশেষ সংবাদ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতা নয়, আসল কাজ ভারতকে হারানো: পাক প্রধানমন্ত্রী

শুধু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতলেই হবে না, হারাতে হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে; গদ্দাফি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে দেশের ক্রিকেটারদের উদ্দেশে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ