সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, উভয় দেশ মিলে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ১৮ হাজার ভারতীয় নাগরিককে চিহ্নিত করেছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণা থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম ভাষণেও তিনি একই কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এর একদিন পরই ১৮ হাজার ভারতীয়কে দেশে ফেরানোর খবর সামনে আসে।
নয়াদিল্লি এই বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ সুরক্ষিত রাখতে চায়। বিশেষ করে এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচি এবং স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার আশায় রয়েছে ভারত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের জন্য শুল্ক-ছাড়ের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
২০২৩ সালে দেওয়া ৩ লাখ ৮৬ হাজার এইচ-১বি ভিসার মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ ছিল। অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে শিথিলতা আনলে বৈধ অভিবাসন এবং শ্রমিক চুক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে ভারত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, “ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসন ও চলাচল সহযোগিতার অংশ হিসেবে উভয় দেশ অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কাজ করছে। এটি বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যেই করা হচ্ছে।”
২০২৪ অর্থবছরে মার্কিন সীমান্তে টহলরত কর্মকর্তাদের দ্বারা আটক ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা সামগ্রিকভাবে ৩ শতাংশ হলেও সম্প্রতি ভারতীয়দের সংখ্যা বাড়ছে।
ভারত কর্মসংস্থানের সংকট মোকাবিলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ান, সৌদি আরব, জাপান ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর সঙ্গে অভিবাসন চুক্তি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান সহযোগিতার মাধ্যমে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বাড়াতে চায় মোদি সরকার।
মেক্সিকো, ভেনিজুয়েলা ও গুয়াতেমালার মতো দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা কম হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সমস্ত অবৈধ ক্রসিংয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশের জন্য ভারতীয়রা দায়ী বলে মার্কিন কাস্টমস ও বর্ডার প্রোটেকশনের ডেটা জানাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বাড়াতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগ ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে আশাবাদী উভয় দেশ।
সূত্র: মানবজমিন