সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দেয়ার তাগিদ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সে উদ্দেশে সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার জন্য সময়ও বেঁধে দেয় সরকার। এবার সর্বসাধারণের জন্য নিজের আর্থিক অবস্থা তুলে ধরলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে সেই বিবরণী লিখে প্রকাশ করেন তিনি।
স্টেট্যাসে তিনি লেখেন, ২০১০ সালের দিকে ঢাকার নিম্নবিত্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীর মধ্যবর্তী দনিয়া এলাকায় পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেন। সেই ভবনের ১১৫০ স্কয়ারফিটের একটি ফ্ল্যাট আমি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। ২০১০ সালে দনিয়া ছেড়ে আসলেও এখনও ফ্ল্যাটটি আমার মালিকানায় আছে।
তিনি লেখেন, তার ভাই এখনও সেই ভবনে বসবাস করেন। এক সময় ভেবেছিলেন তার কাছে ফ্ল্যাটটি বিক্রি করে দেবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
শফিকুল আলম লেখেন, জীবনের কোনো এক সময় হয়তো দনিয়ায় ফিরে যাবো। বাড়িতে গেলে আমি এখনও করিডোরে বাবা-মাকে হাঁটতে দেখি। আমার প্রয়াত বাবার কোরআন তেলাওয়াতের শব্দ শুনি, মা যেভাবে বিনয়ের সঙ্গে সালাত আদায় করতেন তাও যেন দেখতে পাই।
২০১৪ সালে রাজধানীর শাহীনবাগে একটি ১১০০ স্কয়ারফিটের ফ্ল্যাট কিনেছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন স্ট্যাটাসে। ভাই এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন কিছু টাকা দিয়েছিলেন, আর বাকিটা আমার সঞ্চয় থেকে দিয়েছিলাম। আমি জায়গাটি ভালোবাসি। তবে নিরাপত্তার কারণে হয়ত খুব শিগগিরই এই ফ্ল্যাট ছেড়ে যেতে হবে।
শফিকুল আলমের ভাষ্য, আমাদের এলাকার মসজিদের ভিক্ষুকরাও আমাকে চেনেন। কিছুদিন আগে কয়েকজন তরুণ আমাকে তাদের আড্ডার সামনে দিয়ে হাঁটার সময় ‘গণশত্রু’ বলে ডেকেছিল। এ কারণে আমাকে হয়ত শিগগিরই সরকারি একটি ফ্ল্যাটে চলে যেতে হবে। এসব নিয়ে আমার পরিবার বেশ চিন্তিত।
এছাড়া তিনি আরও লেখেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে আমি আমার এক শ্যালকের কাছ থেকে ময়মনসিংহে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। খুব সস্তায় পেয়েছিলাম সেটি। একই ভবনে আমার স্ত্রী তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এই দুটি ফ্ল্যাট আমাদের জন্য মাসিক আয়ের একটি উৎস। এছাড়া গ্রামে আমার ৪০ শতাংশ আবাদি জমি আছে।
স্ট্যাটাসে কিছু নগদ অর্থের বিবরণ দিয়েছেন শফিকুল আলম। তিনি লেখেন, আমার একটি মাত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে যেখানে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা (১১.৪ মিলিয়ন টাকা) সঞ্চিত আছে। এই আগস্টে আমি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিতে দুই দশকের চাকরি ছেড়েছি। অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের বেশিরভাগই আমার এএফপির চাকরির পেনশন এবং গ্র্যাচুইটির। কিছু মানুষ আমার কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ধার নিয়েছে। আমার ধারণা, বছরের শেষে আমার সঞ্চয় হয় অপরিবর্তিত থাকবে, নয়তো খরচের কারণে কমে যাবে। আমার একটি গাড়ি আছে। ঢাকা শহরে একটি গাড়ি পরিচালনা এবং ড্রাইভার রাখার মাসিক খরচ প্রায় ৫০ হাজার টাকা।