আবারও বিতর্কের মুখে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা ও বিধানসভা সদস্য কাঞ্চন মল্লিক। তার স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই এই বিতর্কের মুখে পড়লেন তিনি।
জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে এক সুস্থ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন কাঞ্চন-পত্নী শ্রীময়ী চট্টরাজ। দিন কয়েকের মধ্যেই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন দম্পতি। নবজাতক বা প্রসূতির কোনও শারীরিক জটিলতার খবর জানা যায়নি। তবে ওই বেসরকারি হাসপাতালেই খরচ হয়েছে ছয় লাখ রুপি।
মঙ্গলবার বিধানসভায় সেই ছয় লাখ রুপির বিল জমা দেন কাঞ্চন। এরপরই বিতর্ক শুরু হয় বিধায়ক-অভিনেতাকে নিয়ে। কীভাবে এত বড় অংকের বিল হয়? এ প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। বিধানসভায় কাঞ্চন মেডিকেল বিল জমা দেওয়ার পর থেকেই শ্রীময়ীকেও অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। সে প্রসঙ্গে এবার মুখ খুলেছেন শ্রীময়ী নিজেও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রীময়ী দাবি করেছেন, সরকারি কর্মী হিসেবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খরচ পেতেই পারেন তার স্বামী। তাছাড়া, কে কোথায় খরচ করবেন তা নিয়েও কারও মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই বলে দাবি করেন অভিনেত্রী। তিনি লিখেছেন, “বিধানসভায় বিল জমা দিয়েছে কি দেয়নি সেই বিষয়ে আমি উত্তর দেওয়ার কেউ নই। কারণ আমি বিধানসভার সদস্য নই। আর আমার স্বল্প অভিজ্ঞতা যেটা বলে, যা দেখেছি এতকাল ধরে, যেকোনও সরকারি কর্মচারী (রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী), তারা তাদের মেডিকেল পরিষেবাটা পায়। এটাই সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় সুবিধা।”
কিন্তু চিকিৎসকের পারিশ্রমিক কেন এত বেশি, এ প্রশ্নের উত্তরে শ্রীময়ীর দাবি, “আমার চিকিৎসকের পারিশ্রমিক নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তারা একবার চিকিৎসকের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা বিচার করে তারপর প্রশ্ন করুন। আরেকটা কথা জানাতে চাই, ডাক্তারবাবুর একমাত্র রোগী কাঞ্চন মল্লিক বা শ্রীময়ী চট্টরাজ নন। একবার ডাক্তারবাবুর সেই দিকটা যাচাই করে এবং ডাক্তারবাবু কে, ডাক্তারবাবুর রোগী কারা এবং তার সম্বন্ধিত সমস্ত তথ্য যাচাই করে তার পর বিভিন্ন মন্তব্য পেশ করা উচিত বলে আমার মনে হয়।”
শ্রীময়ীর সাফ কথা, “কে কোন চিকিৎসককে বেছে নেবেন, কে কোন রেস্তরাঁয় খাবেন, কে কোন জামাকাপড় পড়বেন, কোথা থেকে কিনবেন, কার সরকারি না বেসরকারি হাসপাতালে সন্তানের ডেলিভারি হবে, এটা একান্ত তাদের ব্যক্তিগত মতামত। এ নিয়ে দয়া করে অনধিকার চর্চা আপনারা করবেন না।”
অভিনেত্রী মনে করেন না তারা কোনও অপরাধমূলক কাজ করেছেন। তাই তার অনুরোধ, “অনেক কিছু নিয়ে কথা বলার, সমালোচনা করার বা চর্চা করার বিষয় রয়েছে। কাঞ্চন মল্লিক আর শ্রীময়ী চট্টরাজের কয়টা বাচ্চা হল বা কোথায় হল বা কত রুপি খরচ হল, এই ধরনের চর্চা করে নিজেদের শিক্ষার পরিচয়টা আর বাড়াবেন না।”
এ ধরনের চর্চা যে আদতে তাদের প্রচারের আলোয় রাখছে, তা নিজেও মনে করেন শ্রীময়ী। তিনি লিখেছেন,“আমাদের অযথা অতি-মূল্যবান বানিয়ে দেবেন না। এই পৃথিবীর অনেকেই মা হয়েছেন তাদের নিজেদের মতো করে, নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী এবং একান্ত ব্যক্তিগতভাবে, নিজেদের পছন্দ মতো চিকিৎসক ও হাসপাতালে। তাই আমি কোনও বিরল মা নই।”