১৫ বছরের স্বৈরাচার সরকারের পতন হওয়ায় সম্প্রতি ইকোনমিস্টের কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার খেতাব জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারটি নেয় ব্রিটিশ সাময়িকীটি।
সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয় ২০২৫ সালে নির্বাচন আয়োজনের পর তিনি কী করবেন? এর জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার চাকরি আসলে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোর করে এ কাজে আনা হয়েছে। আমি আমার কাজ করছিলাম এবং তা উপভোগ করছিলাম। এ জন্য আমি প্যারিসে ছিলাম। সেখান থেকে আমাকে টেনে আনা হয়েছে অন্য কিছু করার জন্য। সুতরাং আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব, যা আমি আমার সারা জীবন ধরে করেছি। আর তরুণরাও এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আমার সেই দলে বা আন্দোলনে ফিরে যাব যেটা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।’
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঝুঁকি নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশ্বস্ত করছি যে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না। তরুণেরা ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণেরা পুরো বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে। এটা শুধু এক দেশ বা আরেকটি দেশ পরিবর্তনের বিষয় না। বাংলাদেশ যা করেছে এটি একটি উদাহরণ যে তরুণরা কত শক্তিশালী।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করছিলেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
তারা আরও বলেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে।