সিরিয়া এখন দেশ পুনর্গঠনের দিকে নজর দিয়েছে। এখন তারা ইসরাইলের সাথে নতুন করে সঙ্ঘাতে নিয়োজিত হতে আগ্রহী নয়। ফলে সিরিয়ার ওপর হামলা চালানোর জন্য ইসরাইল যে যুক্তি দিচ্ছে, তা মিথ্যা। এমন মন্তব্য করেছেন সিরিয়ার কার্যত নেতা আহমদ আল-শারা। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত আবু মোহাম্মদ হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন। গত সপ্তাহে এই গ্রুপই বাশার আল-আসাদ সরকারকে উৎখাত করে।
এরপর থেকে ইসরাইল সিরিয়ার ভেতরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছ্ তারা সিরিয়ার অনেকটা ভেতরে প্রবেশ করে ফেলেছে। এমনকি কৌশলগত মাউন্ট হারমনও দখল করেছে। এই পাহাড় থেকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কও দেখা যায়। সেখানকার সিরিয়া বাহিনীর পরিত্যক্ত চৌকিগুলোর নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।
ইসরাইল জানিয়েছে, তারা সেখানে স্থায়ীভাবে থাকতে চায় না। তারা সিরিয়ার অভ্যন্তরে তাদের প্রবেশকে সাময়িক বলে অভিহিত করেছে। তবে ইতোমধ্যে ইতিহাসের বৃহত্তম হামলা চালিয়ে সিরিয়ার সামরিক শক্তি একেবারে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডানসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ গোলান মালভূমির বাফার জোন ইসরাইলের দখল করার নিন্দা
সংবাদ সম্মেলনে শারা বলেন, ‘ইসরাইলের যুক্তিগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাদের সাম্প্রতিক সঙ্ঘনের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই লঙ্ঘনের ফলে এই অঞ্চলে অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তেজনা বাড়ছে। তিনি বলেন, সিরিয়ার মাটিতে ইসরাইলের এসব হামলা রেড লাইন অতিক্রম করেছে।
সিরিয়া টিভির ওয়েবসাইটে প্রচারিত ওই সাক্ষাতকারে তিনি আরো বলেন, ‘সিরিয়া যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। অনেক বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। আর নতুন সঙ্ঘাত চায় না। আরো ধ্বংস ডেকে আনে, এমন কোনো বিরোদে জড়াতে চায় না।’
এই বিদ্রোহী নেতা সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং উত্তেজনা এড়ানোর দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ইসরাইলের নাম উল্লেখ না করেই বলেন, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একমাত্র পথ হলো কূটনৈতিক সমাধান। ‘বেহিসাবি সামরিক অ্যাডভেঞ্চার’ কাঙ্ক্ষিত নয়।
প্রায় এক দশক আগে রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপ আসাদের অনুকূলে নিয়ে এসেছিল পরিস্থিতিকে। সেই রাশিয়াই এবার ক্ষমতাচ্যুত বাশারকে আশ্রয় দিয়েছে। এ ব্যাপারে নতুন নেতা বলেন, রাশিয়ার সাথে সিরিয়ার সম্পর্ক অভিন্ন স্বার্থ পূরণ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সতর্ক ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল, আরব নিউজ