যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসী বসবাস করেন। তাদের মধ্যে বড় একটি অংশ শিক্ষার্থী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন তারা। তবে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় পর থেকেই তাদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। ট্রাম্পের অভিবাসী খেদানোর মিশনে তারা বলির পাঠা হতে পারেন। তাই দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ই–মেইল করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগেই নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছে। খবর বিবিসির।
আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি হোয়াইট হাউসে ফিরলে অবধৈ অভিবাসীদের গণবিতাড়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকি এই কাজে সেনাবাহিনী পর্যন্ত মাঠে নামানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
কলোরাডো ডেনভার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লো ইস্ট জানান, ৫ নভেম্বরের ভোটে জয়ের পর ট্রাম্প নিজের সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে উদ্যোগ নিতে শুরু করেছেন। তাই বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে সব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীই উদ্বেগে রয়েছেন।’
মার্কিন হায়ার ইডি ইমিগ্রেশন পোর্টালের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে চার লাখের বেশি অনথিভুক্ত শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় লেখাপড়া করছেন।
নতুনভাবে আমেরিকার ক্ষমতা নিলে ট্রাম্প প্রশাসনে সীমান্ত দেখভালের দায়িত্ব পালন করবেন অভিজ্ঞ অভিবাসন কর্মকর্তা টম হোম্যান। তিনি বলেন, ভয়ংকর অপরাধী ও যারা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি, তাদের আগে আমেরিকা থেকে বের করা হবে। তবে তার এই কথায় আশ্বস্থ হতে পারছেন না অনথিভুক্ত শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক ইস্ট জানান, অভিবাসন ঘিরে যে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা অবিশ্বাস্য রকম উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী তাদের ভিসার মেয়াদ ও এখানে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে দেয়া হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আছে।
চলতি মাসেই ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের জন্য একটি ভ্রমণ–সতর্কতা জারি করেছে। সেখানে তাদের আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ নেয়ার আগেই ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
আমেরিকার ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের আর্লহাম কলেজের শিক্ষার্থী জাপানের আওই মায়েদা। তিনি জানান, ২০২৬ সালের মে মাসে তার স্নাতক শেষ হবে। তবে এখন প্রশাসন কিছুটা বিপজ্জনক হতে চলেছে। তাই সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলবে, এমন আশা তার কমে আসছে।