অন্ননালি, পাকস্থলীসহ পরিপাকতন্ত্রের সব অংশ বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত। সবচেয়ে ভেতরের দিকের অংশকে ‘মিউকোসা’ স্তর বলে। পাকস্থলী ও ডিওডেনামের সবচেয়ে ভেতরের এই ‘মিউকোসা’ স্তরে ক্ষত হলে ‘পেপটিক আলসার ডিজিজ’ বলে।
লক্ষণ ও উপসর্গ : পেটের উপরিভাগে ব্যথা এই রোগের প্রধান লক্ষণ। এ ছাড়া পেটের উপরিভাগে জ্বালাপোড়া, বমি ভাব বা বমি, ক্ষুধামান্দ্য, পেটের উপরিভাগে অস্বস্তি অনুভব হওয়া ইত্যাদি রোগটির মূল উপসর্গ। এসব আলসার থেকে অনেক সময় অলক্ষে রক্তক্ষরণ হয়ে শুধু রক্তশূন্যতা নিয়েও রোগীরা আসতে পারে। আর কিছু রোগীর ক্ষেত্রে রক্ত বমিও হতে পারে। এ ছাড়া কারো ক্ষেত্রে (বিশেষত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার ফলে) আলসার হলে কোনো উপসর্গ না-ও থাকতে পারে।
চিকিৎসা : যেহেতু পেপটিক আলসার সাধারণত হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামক জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে, তাই ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংসকারী অ্যান্টিবায়োটিকই হচ্ছে এই রোগের মূল চিকিৎসা। সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এই জীবাণুকে ধ্বংস করা যায় না বলে একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে পিপিআই জাতীয় ওষুধ (ওমিপ্রাজল, পেন্টোপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, র্যাবিপ্রাজল) ১৪ দিনের জন্য দেওয়া হয়।
জটিলতা : চিকিৎসা না করালে এর কারণে নানাবিধ জটিলতা হতে পারে। এর অন্যতম পাকস্থলী বা ডিওডেনামের খাদ্য চলাচলের নালি সরু হয়ে যাওয়া, যার ফলে অনবরত বমি হতে পারে এবং পরিমাণমতো খাবার গ্রহণ করতে না পারার ফলে শরীর শুকিয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া আলসার থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে রক্ত বমি ও মলের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আলসারের কারণে ডিওডেনাম ছিঁড়ে যেতে পারে, যার ফলে রোগীকে তীব্র পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে।
প্রতিরোধ : ‘পেপটিক আলসার’ একটি জীবাণুঘটিত রোগ, তাই এই জীবাণুকে প্রতিরোধ করতে পারলেই একে প্রতিরোধ করা যায়। হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সাধারণত খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তথা খাবারের গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে এই জীবাণুর সংক্রমণকে প্রতিহত করা যায়।
পরামর্শ দিয়েছে
ডা. মুহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন
সহকারী অধ্যাপক, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল