ভারতে বাংলাদেশিদের অবাধ অনুপ্রবেশকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগ তুলে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ‘ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার’ (জেএমএম) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের বিরুদ্ধে ফের তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি দাবি করেন, ভোটের জন্য বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশে মদদ দিচ্ছে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটির জোট সরকার। এমনকি বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ঢুকছে এমন ব্যক্তিদের ভোট পাওয়ার লোভে গোটা রাজ্যে তাদের বসবাসের জায়গা করে দেয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এতে করে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে সেখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী।
ঝাড়খণ্ডে চলতি মাসেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটকে সামনে রেখে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যুতে সম্প্রতি কঠোর মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পরে এবার ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে জেএমএমের কঠোর সমালোচনা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। সোমবার রাজ্যটির পলামু অঞ্চলের গঢ়ওয়ায় বিজেপির সভার তিনি অনুপ্রবেশ নিয়ে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস, আরজেডির জোট সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন।
এই রাজ্যে মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতাসীন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান বিরোধী দল। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল, তবে সেই নির্বাচনে তারা পরাজিত হয় এবং বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে জেএমএম ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের (আইএনসি) জোট সরকার পরিচালনা করছে। এই রাজ্যে বিজেপির শক্তিশালী অবস্থান এবং উল্লেখযোগ্য সমর্থনের ভিত্তি রয়েছে। ভোটারদের মন জয় করার জন্য তারা অনুপ্রবেশ ও শাসন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে জেএমএম সরকারের নীতিগুলোর বিরোধিতা করে আসছে।
মোদি আরও বলেন, ‘তোষণের রাজনীতিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা, কংগ্রেস এবং আরজেডি। এই তিনটি দলই অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন এবং মদদ দিচ্ছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোট পাওয়ার জন্য তাদের গোটা ঝাড়খণ্ডে বসবাসের জায়গা করে দিচ্ছে এই তিনটি দল।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি এখানে এমন যে, সরস্বতী বন্দনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, বিপদ কতটা গুরুতর পর্যায়ে চলে গেছে। যখন উৎসবে পাথর ছোঁড়া হয়, দুর্গামাকেও আটকে দেয়া হয়, যখন কারফিউ জারি করা হয়, তখন বোঝা যায় পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। স্থানীয় মেয়েদের সঙ্গে বিয়ের নাম করে যখন প্রতারণা করা হয়, তখন বুঝতে হবে পানি কতদূর গড়িয়েছে এই অঞ্চলে।’
মোদি সোমবার হেমন্ত সোরেনের সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘প্রশাসন যখন (অনুপ্রবেশের কথা) অস্বীকার করে, তখন বুঝতে হবে সরকারযন্ত্রেই অনুপ্রবেশ হয়ে গেছে’। এছাড়া ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতাসীন জোটকে ‘অনুপ্রবেশকারীদের জোট এবং মাফিয়াদের দাস’ বলেও কটাক্ষ করেন মোদি।