ভারতে আতঙ্ক ছড়ানো ‘ব্লাক ফাঙ্গাস’ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সাবধান হয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে ব্লাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হলেও তা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) করোনা প্রতিরোধে চীনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় জাহিদ মালেক এ কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে সুস্থ হয়ে ওঠা কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে ‘কালো ছত্রাকের’সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। বিরল এ সংক্রমণে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের মতো। অনেক সময় আক্রান্তের প্রাণরক্ষায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চোখ বা চোয়ালের হাড় অপসারণ করতে হয়।
গত কয়েক মাসে ভারতে প্রায় নয় হাজারের মতো মানুষের শরীরে ব্লাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাদের একটি বড় অংশের দেহে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে কোভিড থেকে সেরে ওঠার ১২ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে।
ভারতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সতর্ক বার্তা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এমন উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশেও দুইজনের শরীরে রোগটি শনাক্তের কথা জানানো হয়।
গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পরে গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেকজনের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়। রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে তাদের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত করা হয়।
মঙ্গলবার বাংলাদেশেও ব্লাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ পাওয়ার তথ্যটি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছত্রাকটি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলে জানান। ফাঙ্গাসবিরোধী ওষুধ তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানান মন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, চীন সরকারের দেওয়া করোনার পাঁচ লাখ টিকা পেয়েছি, যা আড়াই লাখ মানুষকে দেওয়া হবে। জুন থেকে আমরা আরও বেশি মানুষকে দিতে পারব।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের দেশে টিকা তৈরি করা যায় কি না। সেজন্য আমার রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, তারা যেন আমাদের দেশে প্রযুক্তি এনে টিকা উৎপাদন করতে পারে।’
তিনি বলেন, আমরা দেশে বারবার ‘লকডাউন’ দিতে চাই না। লকডাউন দেওয়ায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
মন্ত্রী জানান, আজ ঢামেকে ২৫৭ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে আজ এই টিকা দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় ভারত থেকে নতুন করে করোনার টিকা আসছে না বলেও জানান জাহিদ মালেক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন- ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ও ঢামেকের অধ্যক্ষ ডা. টিটু মিয়াসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।