মিয়ানমারের সাবেক নেত্রী অং সান সুচি ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর সোমবার প্রথমবারের মতো আদালতে হাজির হন। রাজধানী নেপিডোতে ওই শুনানি দ্রুত স্থগিত হয়ে যায়।
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনসহ তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুনানির আগে আজ প্রথমবারের মতো তাকে তার আইনজীবীদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়।
সেসময় তিনি আইনজীবীদের বলেন, জনগণ যত দিন চাইবে তার রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব তত দিন থাকবে। সামরিক সরকার অং সান সুচির দল ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত ১৬ সপ্তাহ ধরে তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির বিরুদ্ধে গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছে। তবে স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মত হচ্ছে, এই নির্বাচন মোটামুটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ ছিল। অং সান সুচির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মনে করা হয়।
গত ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে গণতন্ত্র-পন্থীদের আন্দোলন সেনাবাহিনী নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। একটি পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী এএপিপি’র হিসেব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত অন্তত আট শ’ লোক নিহত হয়েছে এবং বন্দী করা হয়েছে আরও প্রায় চার হাজার।
অং সান সুচির বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে বেআইনিভাবে ওয়্যারলেস রেডিও আমদানি এবং করোনাভাইরাসের নিয়ম ভঙ্গ করা। শুনানি স্থগিত হওয়ার আগে তাকে সোমবার আইনজীবীদের সাথে ৩০ মিনিট কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ আছেন বলেই মনে হয়েছে, তবে গৃহবন্দী অবস্থায় তিনি গণমাধ্যমের কোনো খবর পাচ্ছেন না। দেশের ভেতর কী হচ্ছে, সেটা নিয়েও তিনি খুব কমই জানেন।
তার আইনজীবী জানান, তিনি দেশবাসীর সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন। সামরিক বাহিনী যে তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে, সেটি নিয়েও তিনি কথা বলেছেন।
তার আইনজীবী জানান, অং সান সুচি বলেছেন, ‘আমাদের দল জনগণের মাঝ থেকে গড়ে উঠেছে, কাজেই যত দিন মানুষ এটি সমর্থন করবে, তত দিন এই দল টিকে থাকবে।’
সূত্র : বিবিসি