আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের সময় প্রতিদ্বন্দ্বী দু’টি মুসলিম গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় উত্তেজিত জনতার গণপিটুনি ও আগুনে পুলিশের এক কর্মকর্তার প্রাণহানি ঘটেছে।
দেশটির পুলিশের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রাজধানী কিনশাসা শহীদ স্টেডিয়ামের বাইরে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে কঙ্গোর প্রতিদ্বন্দ্বী দু’টি মুসলিম গোষ্ঠীর নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এই স্টেডিয়ামে বিভাজন ভুলে একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায়ের পরিকল্পনায় জমায়েত হয়েছিলেন উভয় গোষ্ঠীর সদস্যরা।
কিনশাসা পুলিশের প্রধান সিলভ্যানো কাসোনগো বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানে চরমপন্থীরাও ছিলেন; যারা চাননি যে আজ দু’টি গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।’
দু’টি গোষ্ঠীর মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও শূন্যে গুলি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। কিন্তু দাঙ্গাবাজরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ এবং একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভোঁতা বস্তু দিয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তার মাথায় আঘাত করছেন
একদল জনতা। এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে তার দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই ভিডিওর সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি রয়টার্স।
উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় পুলিশের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিলভ্যানো কাসোনগো। এছাড়া ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪৬ জন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনের এই সংঘর্ষের পর এক গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রতিদ্বন্দ্বী অপর গোষ্ঠীর নেতাদের বেশ কিছু বাড়ি ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে। তবে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই সংঘাত দমন করেছে বলে জানিয়েছেন সিলভ্যানো।
রাজধানী কিনশাসায় এই সহিংসতার পর দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় গোমা শহরে পূর্ব-সর্তকতা হিসেবে ঈদের নামাজের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। আফ্রিকার এই দেশটিতে মুসলিমদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত কম। দেশটির ৯ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বলে ধারণা করা হয়।