হজের বিষয়ে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার অনুরোধ জানিয়ে শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সরকার। মন্ত্রণালয় বলছে, কিছু অসাধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে হজের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে করোনা মহামারীর কারণে গতবছর সৌদি সরকার সব মুসলিম দেশ থেকে হজযাত্রা নিষেধ করেছিল। এবছরে এখনো সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
ঢাকার বনানীর হাসানুল কবির তার পরিবারের আরো পাঁচ সদস্যসহ হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন গত বছর। বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করে টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু সৌদি আরব সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত বছর অন্যদেশ থেকে সেদেশে যেয়ে হজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ফলে তাদের হজে যাওয়া হয়নি।
তবে তিনি অপেক্ষা করছেন এ বছর যদি অনুমতি দেয় সৌদি সরকার, তাহলে তারা হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
হাসানুল কবিরের মতো গত বছর হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করে রেখেছেন ৬১ হাজার হজ যাত্রী।
সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, এসব মানুষ সরকারি এবং বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন।
তবে সৌদি আরব সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সৌদি আরবের বাইরের দেশ থেকে হজের উদ্দেশ্যে সেদেশে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এখন ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, এ বছর হজে যাওয়ার জন্য সরকার নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত যেন কেউ কোনো আর্থিক লেনদেন না করেন।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মো: আনোয়ার হোসেন বলছেন, হজে নিয়ে যেতে পারবেন বলে কিছু অসাধু ব্যক্তির টাকা আত্মসাতের খবর তারা পেয়েছেন। সেই কারণে তারা সতর্ক করছেন।
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে আগ্রহী প্রাক নিবন্ধিত ও নিবন্ধিত ব্যক্তিবর্গের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি অসাধু চক্র সরলমনা হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিগণকে ২০২১ সালে পবিত্র হজ পালনে অন্তর্ভুক্ত করবেন এই মর্মে অর্থ গ্রহণ করছে, যা অনভিপ্রেত এবং সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
‘এই অবস্থায় এই চক্রের হাত থেকে সাবধান থাকার অনুরোধ করা হলো। এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ২০২১ সালের হজের বিষয়ে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ করা হলো,’ বলেন আনোয়ার হোসেন।
সরকার বলছে, গতবছর ৬১ হাজার মানুষের নিবন্ধন রয়েছে তাই এ বছরে নিবন্ধন বন্ধ রেখেছে সরকার।
যদি সৌদি সরকার অনুমোদন দেয় তাহলে সব শর্ত মেনে তারা গত বছরে যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের মধ্যে থেকেই যেতে পারবেন।
লাব্বাইক ট্রাভেল অ্যান্ড টুরস প্রতিবছর হজযাত্রীদের বেসরকারিভাবে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সব কাজ করে।
এই হজ এজেন্সির মালিক জামাল উদ্দিন আহমদ বলছেন, সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত কোনো এজেন্সি এ ধরনের কাজ করবে না। তবে প্রত্যন্ত এলাকায় তার ভাষায় দালালদের দ্বারা এ ঘটনা ঘটতে পারে।
সরকারের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিবছর এই সময়ে হজ চুক্তি হয়ে যায় এবং হজে যাওয়ার জন্য সার্বিক ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হয়ে যায়।
যেহেতু সৌদি আরব সরকারের কাছ থেকে এখেনো কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি, তাই এবছরে হজে যাওয়া যাবে কিনা সেই ব্যাপারে তারা চূড়ান্তভাবে কিছু এখনি জানাচ্ছেন না।
সূত্র : বিবিসি