মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার রাতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া তার প্রথম ভাষণে শিশু ও পরিবারদের জন্য সরকারের জাতীয় সহযোগিতা কর্মসূচির ব্যাপক সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছেন। খবর ভয়েস অব আমেরিকা।
তিনি বলেন, “আজ রাতে আমাদের সংকট ও সুযোগ নিয়ে, আমাদের দেশের পুনর্নির্মাণ নিয়ে, আমাদের গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয় নিয়ে এবং আমেরিকার ভবিষ্যৎ বিজয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি।”
ক্ষমতাগ্রহণের শুরুতে কিছু চ্যালেঞ্জে পড়ার কথা উল্লেখ করেন। যেমন; করোনাভাইরাস মহামারি ও এর ফলে অর্থনৈতিক সংকট এবং জানুয়ারি মাসে তার শপথ নেওয়ার কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে আক্রমণ।
বাইডেন বলেন, “এখন এই ১০০ দিন পরে আমি জাতিকে জানাতে পারি, আমেরিকা আবার এগিয়ে যাচ্ছে।”
এ সময় করোনা টিকাদানে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। এও জানান, এই ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে ৫ লাখ ৭৪ হাজার লোকের মৃত্যুর কারণ এবং ৩ কোটি ২০ লাখ লোককে সংক্রমিত করেছে, করোনাকে পরাস্ত করতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “এই ভাইরাসকে পরাস্ত করতে আরও অনেক কিছু করতে হবে। আমাদের সুরক্ষা কমিয়ে ফেলতে পারি না।”
বাইডেন জনগণকে টিকা নিতে বলেন এবং স্মরণ করিয়ে দেন যে ১৬ বছর ও তার ঊর্ধ্বে যাদের বয়স তারা এখন টিকা নিতে পারে।
তিনি বলেন, “তবে আজ রাতে আমি এ কথা বলতে পারি যে আপনাদের অর্থাৎ আমেরিকান জনগণের জন্যই এই গত ১০০ দিনে ইতিহাসের সব চেয়ে জঘন্য মহামারির বিরুদ্ধে আমরা অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছি।”
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই ভাষণ সরাসরি প্রতিনিধি পরিষদ কক্ষে শুনেছেন প্রায় ২০০ জন। সেখানে বিধায়ক ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তারাও ছিলেন। সাধারণত এ ধরনের ভাষণে ১৬শ’ লোক উপস্থিত থাকেন, তবে করোনাভাইরাসের চলমান হুমকির মুখে এই সংখ্যা কমিয়ে নিয়ে আসা হয়। অনুসরণ করা হয় মাস্ক পরিদানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি।
বাইডেন তার ভাষণে ১৮ লাখ কোটি ডলারের পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে দুই বছরের জন্য সরকারি ব্যয়ে কিন্ডারগার্টেন পূর্ব পর্যায়ের শিক্ষা এবং তরুণদের জন্য দুই বছরের বিনা বেতনে কমিউনিটি কলেজে শিক্ষার ব্যবস্থা, যার অনেকখানি আসবে দেশের সব চেয়ে ধনী ব্যক্তির করের অর্থ দিয়ে।
বাইডেনের প্রস্তাবে রয়েছে, পরিবারগুলোর জন্য ২২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের শিশু পরিচর্যার সহায়তা। এর আওতায় অভিভাবকদের অন্তত প্রতি মাসে ২৫০ ডলার করে দেওয়া হবে।
বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীন, রাশিয়া ও ইরানের সম্পর্কের বিষয়টিও বিস্তারিত তুলে ধরেন। মিত্রদের সঙ্গে অধিকতর কাজ করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে ন্যাটো সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা। বলা হচ্ছে, এই নীতি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের পররাষ্ট্র নীতি থেকে ভিন্ন, যেখানে কেবল মাত্র যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।