আমদানির পরও চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ চালের মজুদ রয়েছে সরকারি গুদামগুলোতে। যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গুদামে যেখানে চালের মজুদ থাকার কথা কমপক্ষে ১৫ লাখ মেট্রিক টন, সেখানে রয়েছে মাত্র ৩ লাখ টন। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, মজুদের ব্যাপারে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতাই সঙ্কটের প্রধান কারণ। তবে খাদ্যমন্ত্রীর দাবি, আমদানি ব্যবস্থাপনায় দেরি হওয়ায় মজুদ কমেছে।
করোনায় দেশে চালের ঘাটতির আশঙ্কায় গেল বছরের আগস্টেই ২০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সরকারিভাবে ১০ লাখ টন চাল আমদানির কার্যক্রম শুরু করতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সময় লেগে যায় চার মাস। আর সাড়ে ৩৭ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি খাতকে আমদানির অনুমতি দেয়ার বিষয়টি গড়ায় ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারিভাবে চাল আমদানি হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৫৯ হাজার টন। আর বেসরকারিভাবে হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ টন। এর মধ্যে তলানিতে ঠেকেছে সরকারি মজুদ, রয়েছে মাত্র ৩ লাখ টন যা চাহিদার ২০ শতাংশ।
আমদানিকারক নিরব বরণ সাহা বলছেন, প্রথমত কারণ ছিল বর্ডার থেকে সময়মতো পণ্য না আসা। একসঙ্গে যদি একদিনে বিভিন্ন বর্ডার থেকে এক লাখ মেট্রিক টন (কম-বেশি) পণ্য প্রবেশ করতো তাহলে স্বাভাবিকভাবে এখানে ধারাটা ঠিক থাকতো।
চালের মজুদ সঙ্কটে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিকে দায়ী করছেন কৃষিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা। এদিকে খুচরা বাজারে সব ধরনের চাল বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামে। কেজি প্রতি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়, আর চিকন চাল ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. এম আসাদুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরও যে ৮ মাস খাদ্য মন্ত্রণালয় বসে থাকলো তার জবাবদিহিতা তো শেষ পর্যন্ত করতে হবে তাদের।
বাজার বিশ্লেষক এস এম নাজের হোসেন বলেন, সফল না হওয়ার পেছনে মনে করি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি এবং অদক্ষতা ছিল। তারা যদি বিষয়টিতে সঠিকভাবে মনোযোগ দিতেন তাহলে আজকের এই সঙ্কট হতো না।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, গাড়ি ভাড়া করে সরবরাহ করা হচ্ছে। চাল আসতেছে। স্থানীয় প্রক্রিয়া হচ্ছে এবং আমদানিকৃত চাল আগামী ১৬ তারিখের মধ্যে চলে আসবে। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি করব।