ভারতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও অধিকাংশের দেহেই তৈরি হচ্ছে না করোনা প্রতিরোধী প্রোটিন বা অ্যান্টিবডি। যাদের দেহে তৈরি হচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৫-৬ মাসের মধ্যে দুর্বল বা অকার্যকর হয়ে পড়ছে এই প্রতিরোধী শক্তি।
কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) নামের একটি ভারতীয় গবেষণা সংস্থার সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সিএসআইআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ভারতে করোনার অতি উচ্চ সংক্রমণের অন্যতম কারণ এটি।
সংস্থাটির গবেষক শান্তনু সিংহ বলেন, ‘মানবদেহের নিউক্লিওক্যাপসিড প্রোটিনই মূলত সার্স-কোভ-২ ভাইরাস বা করোনাভাইরাসের মূল প্রতিরোধী শক্তি। অনেকের দেহে সহজাতভাবেই এর শক্তিশালী উপস্থিতি থাকে, আবার অনেকের দেহে এই প্রোটিন যথাযথ কার্যকর হয় করোনায় প্রথমবার আক্রান্ত হওয়ার পর।’
স্বেচ্ছাসেবীদের সবারই করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাত্র ১০ দশমিক ১৪ শতাংশের দেহে করোনা প্রতিরোধী প্রোটিন নিউক্লিওক্যাপসিডের উপস্থিতি রয়েছে।
কিন্তু সমীক্ষায় আরো দেখা গেছে—নিউক্লিওক্যাপসিড প্রোটিনের উপস্থিতি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ২০ শতাংশের দেহে এই প্রতিরোধী প্রোটিন আছে দুর্বল বা প্রায় অকার্যকর অবস্থায়।
ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৩০ জানুয়ারি, কেরালা রাজ্যে। তারপর থেকে শুরু হওয়া করোনা মহামারিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর গত বছর নভেম্বর থেকে কমে আসছিল দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
তারপর গত মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফের বাড়তে শুরু করে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যু। মার্চ মাসে করোনায় ভারতে মারা গিয়েছিলেন ৫ হাজার ৬৫৬ জন করোনা রোগী।
চলতি এপ্রিলে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় গুণেরও বেশি। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এপ্রিলে এখন পর্যন্ত ভারতে মারা গেছেন ৩৪ হাজার ৬০০ রোগী এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি, ১৭ হাজার ৩৩৮ জন মারা গেছেন গত সাত দিনে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৭৬ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৭ জন এবং মারা গেছেন মোট ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৯৪ জন।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ লাখ ২৩ হাজার ১৪৪ জন, মারা গেছেন ২ হাজার ৭৭১ জন।