করোনায় দিশেহারা ভারত। অক্সিজেন আর চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। করোনায় বিপর্যস্ত ভারতের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। এরই মধ্যে অক্সিজেনসহ বিভিন্ন মেডিকেলসামগ্রী পাঠিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হ্যাশট্যাগ ইন্ডিয়া নিড অক্সিজেন’ লিখলেই উঠে আসছে ভারতের করোনা মহামারির চরম ভয়বহতা। মহামারির কাছে কতটা অসহায় মানুষ। স্বজন হারানো আর্তনাদে ভারী দিল্লি, মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের আকাশ। করোনা মহামারিতে ভেঙে পড়েছে দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
অক্সিজন আর চিকিৎসার অভাবে প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছেন অসংখ্য করোনা রোগী। হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে বাইরেই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন অনেকে। কেউবা আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন ব্যর্থ হয়ে। শ্মশানগুলোতেও জায়গা নেই দাহ করার। তাই অনেক হাসপাতালের বেইজমেন্টেই চলছে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।
ভারতের চরম বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমাদেশগুলো। করনো সংকট মোকাবিলায় দেশটিকে সব ধরনের সহায়তার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি ও ফ্রান্স। এ ছাড়া জরুরি ভিত্তিতে ৬ শতাধিক মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ৪৯৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ভেন্টিলেটরসহ বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে কাঁচামাল সরবাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে ভারতে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাবে বাইডেন প্রশাসন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন লাখ ৫৪ হাজার ৫৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে দুই হাজার ৮০৬ জন।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত দেশটিতে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৭৩ লাখ ৬ হাজার ৩০০ জন এবং মারা গেছেন এক লাখ ৯৫ হাজার ১১৬ জন। আক্রান্তের দিক থেকে দেশটি বিশ্বে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
দেশটিতে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে এক কোটি ৪২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৪০ জন এবং বর্তমানে আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে ২৮ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৪ জন।
ভারতে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৯৯ শতাংশ এবং মারা যাওয়ার হার এক শতাংশ। সে দেশে বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছে আট হাজার ৯৪৪ জন এবং বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।