করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভারত সরকারকে। প্রতিদিনই দেশটিতে শনাক্ত এবং মৃত্যু সংখ্যায় নতুন রেকর্ড করছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের নতুন যে ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ ঘটছে, সেটা থেকে নিরাপদ থাকতে ভারতের সঙ্গে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে বিশেষজ্ঞরা। এমনকি প্রয়োজন হলে সীমান্তে কড়াকড়ি বা বন্ধেরও দাবি উঠেছে।
এমন অবস্থায় সরকারের অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা এখনও ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করিনি। আমরা ভারত থেকে আসা নিরুৎসাহিত করছি। প্রতিবেশী দেশ থেকে আমাদের লোকেরা এখানে এলে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে, এই অবস্থায় আছে।’
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবেন কিনা?- এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘সেটা আমি জানি না, আমিতো একা সিদ্ধান্ত নেই না। এটা আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলবে, তাদের এডভাইস (উপদেশে) যা করার তা করা হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের দেশ থেকে বহুদিন ধরে কাউকে নেয় না। শুধু যারা অসুস্থ, জরুরি চিকিৎসার জন্য যান তাদের জন্য বিশেষ ফ্লাইট আছে, তারা যাচ্ছেন। এটা আমরা বন্ধ করিনি। আর যারা আসেন, বিশেষ করে স্থলপথে আমার একটা প্রস্তাব করেছিলাম, আসা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। সম্প্রতি আমাদের একটা টিম আসছে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে, তাদের ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ নিউ ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। আমরা এ জন্য প্রস্তাব করেছিলাম…পরে আমাদের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলো, যেহেতু এরা বাংলাদেশি সুতরাং আসতে দেব, তবে অবশ্যই ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই হবে। এ ব্যবস্থায় তারা আসতে পারেন।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করেছে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমরা নিরুৎসাহিত করেছিলাম, তখন অনেকে বললেন; তারা বাংলাদেশি নাগরিক কিভাবে আটকাই? আমরা বলেছি, জাপান, অস্ট্রেলিয়ান এবং ভারত তাদের নাগরিকদের যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ এটা একটা ইমার্জেন্সি অবস্থান।
এদিকে ভারতে যে ধরনের (ভ্যারিয়েন্ট) করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে সেটা বাংলাদেশে ঢুকলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে শনিবার এক অনুষ্ঠানে সতর্ক করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ ভারতে ডাবল ভ্যারিয়েন্টে মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। ভারতের এ ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের তুলনায় বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের দৃষ্টি রাখতে হবে, ভারতের ডাবল ভ্যারিয়েন্ট যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ না করে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগতদের অবশ্যই কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে। যদি ভারতের ডাবল ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। তাই ভারতের ডাবল ভ্যারিয়েন্ট যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ না করে সেজন্য এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’