করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ‘সুনামি’তে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়তে বসেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। এ পরিস্থিতিতে দেশটির রাজধানী শহর দিল্লিতেই একটি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন ২০ জন করোনা রোগী, জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে আরও অন্তত ২০০ জনের।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শুধু সেখানেই নয়, একই অবস্থা প্রায় গোটা দেশেই।
কিছুদিন আগেই শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালে ২৫ জন করোনা রোগীর মৃ্ত্যু হয়েছিল। এবার অক্সিজেনের অভাবে জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে মারা গেলেন ২০ রোগী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কাছে যে পরিমাণ অক্সিজেনের মজুত রয়েছে তা দিয়ে বড়জোর দেড় ঘণ্টা চলতে পারে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, এই মুহূর্তে হাসপাতালটিতে ভর্তি ২০০ জনেরও বেশি রোগীর জীবন বিপন্ন।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, অক্সিজেন না থাকায় দিল্লির বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি অনেক জায়গায় গুরুতর রোগীদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার ভারতে নতুন করে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে দিল্লিতেই পাওয়া গেছে ২৬ হাজার ১৬৯ জন। বৃহস্পতিবার রাতে পাওয়া তথ্যমতে, শহরটিতে একদিনে অন্তত ৩০৬ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি দিল্লির জনবসতিপূর্ণ এলাকার পাশে একটি গণচিতার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে মরদেহ সমাহিত করার জায়গা পেতে হিমশিম খাচ্ছে করোনায় মৃতদের পরিবারগুলো। শুধু শ্মশানই নয়, একই চেহারা ভারতীয় রাজধানীর কবরস্থানগুলোতেও।
এর আগে গুজরাট, মধ্যপ্রদেশের মতো এলাকায় শ্মশানের বাইরে মরদেহ নিয়ে সারি সারি অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে দিল্লির পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, শ্মশানের বাইরে লাইনেও জায়গা পাচ্ছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে বাড়িতেই প্রিয়জনের মরদেহ রেখে দিতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।