শরীরে ২০ কেজি ওজনের অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে করোনা আক্রান্ত মাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সুস্থা মাকে নিয়ে সেই বাইকেই বাড়ি ফিরেছেন ছেলে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে টানা ছয় দিন চিকিৎসা শেষে শুক্রবার বেলা ১১টায় ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সূর্যপাশা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাকে।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে করোনা ইউনিটের সামনে দাঁড়িয়ে মা রেহানা পারভীনে (৫৮) সঙ্গে বিজয় সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন মেঝ ছেলে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান টিটু, বড় ছেলে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান মিঠু ও ছোট ছেলে রাকিবুল হাসান ইভান।
এসময় তারা তাদের মমতাময়ী ময়ের সুস্থতা লাভে হাসপাতালের চিকিৎসক, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন দপ্তর থেকে সহযোগিতা করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিতে দেখা যায় রোগীর অক্সিজেন সাপ্লাই ঠিক রাখতে শরীরের সঙ্গে গামছা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে রেখেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা ছেলে। মোটরসাইকেলের পেছনে অক্সিজেন মাস্ক পড়া অবস্থায় বসে আছেন করোনায় আক্রান্ত স্কুল শিক্ষিকা মা।
এ দৃশ্য দেখতে পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে থাকা চেকপোস্ট থেকে সেই করোনা রোগী বহন করা মোটরসাইকেলটিকে দ্রুত যেতে দেয় পুলিশ। ওই সময় পুলিশের এক সদস্য একটি ছবি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। সেই মা রেহেনা পারভীন (৫০) সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরলেন।
বাসায় ফিরে তিনি নামাজ আদায় করেছেন। তাকে দেখতে আসেন আত্মীয় স্বজনরা। তাদের সঙ্গে কথাও বলছেন এই শিক্ষিকা। তাঁর শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই, এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রেহেনা পারভীন ঝালকাঠির নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল হাকিম মোল্লার স্ত্রী। রেহেনাকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালক তারই মেঝো ছেলে জিয়াউল হাসান টিটু।
তিনি বলেন, মাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এজন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।