spot_img

চীনর সঙ্গে যে তিন ইস্যুকে প্রাধান্য দেবেন বাইডেন

অবশ্যই পরুন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের পর যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনায় সাময়িক বিরতি আসবে বলে ধারণা করছিলেন অনেকে। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে উত্তেজনা অব্যাহত রেখেছে দুই দেশই। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শপথ গ্রহণের পরপরই তাইওয়ান দ্বীপের কাছে দুই ডজনেরও বেশি যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে বেইজিং।

নিজেদের সমুদ্রসীমায় বিদেশি নৌযান প্রবেশ করলে কোস্টগার্ডকে প্রয়োজনে গুলি চালানোর অনুমতি দিয়ে নতুন আইনও পাস করেছে তারা। অপরদিকে দক্ষিণ চীন সাগরে একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব কর্মকাণ্ডকে বাইডেন প্রশাসন ও বেইজিংয়ের মধ্যে আসন্ন বিরোধের সূচনা পর্ব হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে- দক্ষিণ চীন সাগর, তাইওয়ান সংকট ও জাপান-যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রতা এ তিনটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে সামনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিরোধ আরও বাড়তে পারে।

দক্ষিণ চীন সাগর

দক্ষিণ চীন সাগরে প্রায় ১৩ লাখ বর্গমাইল অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। ২০১৪ সাল থেকে ওই অঞ্চলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সেগুলোকে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারের জন্য উপযোগী করেছে বেইজিং।

ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই ও তাইওয়ানসহ আরও অনেকেই অঞ্চলটির মালিকানা দাবি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মালিকানা দাবি না করলেও দেশটির অবস্থান চীনের দাবির বিপক্ষে। ওই অঞ্চলটিতে মিত্রদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওয়াশিংটন। নিয়মিত সেখানে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং সামরিক বিমান পাঠানো হয়। সম্প্রতি ওই অঞ্চলে দুই দেশেরই সামরিক মহড়া বেড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের পক্ষে থেকে ওই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক তৎপরতা কমানোর সম্ভাবনা কম। অবশ্য, গত বছর নির্বাচনি প্রচারণার সময় বাইডেন নিজেও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকা সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। বলেন, সে সময় তিনি শি জিনপিংকে জানিয়েছিলেন যে মার্কিন সেনারা কীভাবে চীনের স্বঘোষিত অঞ্চলের পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে। ‘আমি বলেছিলাম আমরা সেখান দিয়ে উড়ে যাবো, তবে মনোযোগ দিয়ে তাকাবো না’- বলেন বাইডেন।

তাইওয়ান ইস্যু

মার্কিন-চীন উত্তেজনার মধ্যে তাইওয়ান ইস্যু আবারও সামনে এসেছে। সম্প্রতি ওই অঞ্চলে সামরিক মহড়াও বেড়েছে। কয়েক দিন আগেও তাইওয়ানকে নিজের অংশ হিসেবে দাবি করে দ্বীপ অঞ্চলটির কাছে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ ও বোমারু বিমান পাঠায় চীন। এর প্রতিক্রিয়ায় চীনকে তাইওয়ানের ওপর চাপ না দেওয়ার অনুরোধ করে ওয়াশিংটন। চীনের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের প্রতি বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, দশকের পর দশক ধরে তাইওয়ানের প্রতিই নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা খাতে তারা সহযোগিতা দেবে।

তাছাড়া জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের তিন দিন পর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস তাইওয়ান ইস্যুতে বলেন, আমরা বেইজিংকে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে তার সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বন্ধ করে অঞ্চলটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছি।

জাপান-যুক্তরাষ্ট্র মিত্রতা

জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব উল্লেখ করার মতো। টোকিওর কাছে ইয়োকোসুকা অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর সপ্তম নৌবহরের সদর দফতর অবস্থিত। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে টহল দিয়ে থাকে। এছাড়া জাপান সেলফ ডিফেন্স ফোর্স বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও পেশাদার সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করে এবং জাপানি সেনারা নিয়মিত তাদের মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়।

অপর দিকে সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে জাপানের সঙ্গে চীনের বিরোধ রয়েছে। ১৯৭২ সাল থেকে জাপান সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ পরিচালনা করে এলেও ওই অঞ্চলে নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবি করে থাকে বেইজিং। গত বছর চীন দ্বীপপুঞ্জের আশপাশে কোস্টগার্ড জাহাজ মোতায়েন করে।

আর ওই দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে জাপানের দাবির পক্ষে বারবার সমর্থন দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। নতুন প্রশাসনও সে সমর্থন জোরালোভাবে ব্যক্ত করেছে। সম্প্রতি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগার সঙ্গে টেলিফোন আলাপে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, পূর্ব চীন সাগরের বিতর্কিত সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জসহ পুরো জাপানকে রক্ষার ব্যাপারে তার প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনও জাপানি প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে জানান, পূর্ব চীন সাগরের এ দ্বীপপুঞ্জ রক্ষায় মার্কিন-জাপান নিরাপত্তা চুক্তি অনুসরণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। ওই চুক্তি অনুসারে, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জকে কেন্দ্র করে যদি জাপান কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তবে ওয়াশিংটনও টোকিওর পক্ষে যুদ্ধ করবে।

সর্বশেষ সংবাদ

অস্ট্রেলিয়ায় শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

অস্ট্রেলিয়ার সরকার পরিকল্পনা করেছে, ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের এক্স, টিকটক, ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম-সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ