আগামী ১৯ এপ্রিলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিতের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) ওয়াশিংটনের অদূরে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের শহরতলী এলাকায় একটি টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে হোয়াইট হাউসে ফিরে ঘোষণাটি দেন তিনি।
জো বাইডেন জানিয়েছেন, ১৯ এপ্রিলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক টিকা পাওয়ার জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এর আগে এই সময়সীমা ছিল ১ মে। তবে মঙ্গলবার বাইডেন এটি আরও দুই সপ্তাহ এগিয়ে আনার ঘোষণা দেন। তিনি বলেছিলেন, আর কোনো বিভ্রান্তিকর নিয়ম নয়। আর কোনো বিভ্রান্তিকর বিধিনিষেধ নয়। ১৯ এপ্রিলের মধ্যে ১৮ বছর কিংবা তদূর্ধ্ব বয়সের সবাই ভ্যাকসিন পাওয়ার উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন।
এর আগে গেল সপ্তাহ বাইডেন জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের ৯০ শতাংশই ১৯ এপ্রিলের মধ্যে টিকা পাওয়ার উপযোগী হিসেবে বিবেচিত হবেন। তবে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে শতভাগ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা জানান তিনি।
জরিপে অবশ্য দেখা গেছে, ২০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নানা কারণে ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন এটা অপ্রয়োজনীয়। কেউ বলছেন এটি ক্ষতিকর হতে পারে। আবার কেউ সরকার পরিচালিত এই কর্মসূচির ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না।
যারা টিকা নিয়েছেন তাদের অধিকাংশই উল্লেখযোগ্য রকমের কোনো প্রতিক্রিয়ার কথা জানাননি। অনেকে আবার দুই একদিনের জন্য খুব সাময়িক প্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে ভ্যাকসিন বিরোধীরা বহুদিন ধরেই টিকা নেওয়ার বিরোধিতা করে আসছেন।
২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ করেন জো বাইডেন। দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ভ্যাকসিন নেন তিনি।
সরকারি হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ছয় কোটি ২০ লাখ মানুষ টিকার উভয় ডোজ বা পূর্ণাঙ্গ ডোজ নিয়েছেন। এ সংখ্যা দেশটির ১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির প্রথম দিকে শুধু বয়স্ক লোকজন এবং ফ্রন্ট লাইন স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হতো। তবে সরকারের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে সেই সীমাবদ্ধতা আর থাকছে না। বরং প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক নাগরিকের ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। এক পর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে মহামারি করোনার প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এরই মধ্যে করোনার একাধিক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন : ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ১০ ইরানি কর্মকর্তা অভিযুক্ত
ওয়ার্ল্ডো মিটারসের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার ৪৩৮। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ২৬০ জনের।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা