ইসরাইলে রাজনৈতিক সংকট ও অচলাবস্থার মধ্যেই দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের জন্য প্রার্থী মনোনয়ন করতে যাচ্ছেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন। এর আগে সরকার গঠনের বিষয়ে বিভিন্ন দলের সাথে আলোচনার পর এই মনোনয়ন দিতে যাচ্ছেন তিনি।
মঙ্গলবার রিভলিন নতুন মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন বলে সংবাদ জানায় ব্রিটেনভিত্তিক আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে ইসরাইলে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার ধারাবাহিকতায় দুই বছরের মধ্যে চতুর্থ দফায় গত ২৩ মার্চ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনেও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বা তার বিরোধী জোট সরকার গঠনের জন্য ইসরাইলি আইন পরিষদ নেসেটে প্রয়োজনীয় আসন পেতে ব্যর্থ হয়।
নির্বাচনের পর সরকার গঠনে দীর্ঘ অচলাবস্থা কাটাতে নেসেটে আসন পাওয়া বিভিন্ন দলের সাথে আলোচনা শুরু করেন ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট। ১২০ আসনবিশিষ্ট নেসেটের ৫২ সদস্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেই সমর্থন করেন। অপরদিকে ইয়েশ আতিদ দলের প্রধান ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদের নাম প্রস্তাব করেন ৪৫ সদস্য। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ইয়ামিনা দলের প্রধান নাফাতলি বেনেট সাত সদস্যের সমর্থন লাভ করেন।
ইসরাইলের সরকার গঠনের জন্য মনোনীত প্রধানমন্ত্রীকে নেসেটের ৬১ সদস্যের সমর্থন অর্জন করতে হয়।
নেসেটে ১৬ আসন পাওয়া অন্য তিনটি দল প্রেসিডেন্ট রিভলিনের সাথে বৈঠক প্রত্যাখ্যান করে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু চলমান অচলাবস্থা ভাঙতে বেনেট ও সাবেক অপর সহযোগী নিউ হরাইজন পার্টির গিদিওন সারকে তাকে সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
কারো সাথেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না থাকা বেনেটের নেতানিয়াহুর সাথে সংঘর্ষপূর্ণ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে আবার সহযোগিতার প্রায় সম্ভাবনা নেই।
অপরদিকে সার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির মামলার ইঙ্গিত করে জানান, নেতানিয়াহুর অধীনে তিনি আর দায়িত্ব পালন করবেন না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ইয়ায়ির লাপিদকে সমর্থন দেন।
এদিকে নির্বাচনের পর সোমবার থেকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার শুনানি আবার শুরু হয়েছে। নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে অস্বীকার কলে দাবি করছেন, এই মামলা একটি ‘অভ্যুত্থান চেষ্টা’ যার উদ্দেশ্য ‘দৃঢ় রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রীকে’ ক্ষমতাচ্যুত করা।
প্রেসিডেন্ট রিভলিন যাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করুন না কেন, আগামী ২৮ দিনের মধ্যে তাকে নতুন সরকার গঠন করতে হবে। প্রয়োজনে তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে দুই সপ্তাহের অতিরিক্ত সময়ের আবেদন করতে পারবেন। তবে এর মধ্যে সরকার গঠন না হলে প্রেসিডেন্ট অন্য কোনো প্রার্থীকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন।
সূত্র : রয়টার্স