যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় পুলিশের হাতে নিহত জর্জ ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তারের সময় নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশপ্রধান মেদারিয়া আরাডোনদো। তিনি আদালতে বলেন, ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তারের সময় সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন।’ খবর বিবিসি নিউজের
ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের বিচারের ষষ্ঠ দিন সোমবার (৫ এপ্রিল) তিনি আদালতকে বলেন, ফ্লয়েডকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয় তা আমাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং ‘অবশ্যই আমাদের নীতি ও মূল্যবোধের অংশ নয়’।’
ফ্লয়েড হত্যার ঘটনায় যে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, ৪৫ বছর বয়সী বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চাওভিন তাদের মধ্যে প্রধান আসামি। তবে চাওভিন তার বিরুদ্ধে আনা হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। দোষ প্রমাণিত হলে এ মামলায় তার ৪০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে।
গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এই বিচারকার্য শেষ হতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় আইনজীবীরা প্রমাণের চেষ্টা করছেন যে, ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে চাওভিন তার প্রশিক্ষণের নীতি ভঙ্গ করেছেন। পুলিশের সংশ্লিষ্টদের নিয়ম মেনে সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আইনজীবীদের ধারণা, পুলিশের পক্ষ থেকেও বিচারকার্যে সহায়তা করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় মিনিয়াপোলিস পুলিশ প্রধান আদালতে সাক্ষী দেন।
তিনি আরও বলেন, ফ্লয়েডকে যেভাবে সংযত করা হয়েছে তা নিয়ম মেনে করেননি চাওভিন। ফ্লয়েড সংযত হওয়ার পরও বলপ্রয়োগ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন।
তিনি বলেছিলেন, চাওভিন এমনভাবে বলপ্রয়োগ করছিলেন যে ফ্লয়েড কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর পরও তিনি তা অব্যাহত রাখেন। এমনকি ফ্লয়েড নিস্তেজ হয়ে যাওয়া পরও তা অব্যাহত থাকে।
পুলিশপ্রধান আরাডোনদো মতে করেন, এটি কোনো নিয়ম বা নীতির মধ্যেই পড়ে না। এটি আমাদের প্রশিক্ষণের অংশ নয় এবং একই সঙ্গে এটি আমাদের নীতি এবং মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
জালনোট ব্যবহারের অভিযোগে জর্জ ফ্লয়েডকে গত বছর ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশ। আটকের পর ডেরেক চাওভিন নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরলে তিনি মারা যান। পরে এই ঘটনার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে বিক্ষোভ হয়।
এ ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। আদালতে বিচারকার্যে সেই ভিডিয়ো ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।