কোভিড-১৯ মহামারিতে চরম ঝুঁকির মুখে আছেন গর্ভবতী নারী এবং তাদের অনাগত সন্তানরা। গবেষকরা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, কয়েক দশকের নিরাপদ মাতৃত্ব অর্জনের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
গত বছর প্রকাশিত ১৭টি দেশের প্রায় ৪০টি গবেষণাপত্র বিশ্লেষণের ফলাফল অনুযায়ী মাতৃমৃত্যু এবং শিশু মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বুধবার মেডিকেল সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উঠে এসেছে।
গবেষণার তথ্যানুযায়ী, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মতো ব্যবস্থাগুলোর জন্য নয় বরং, স্বাস্থ্য খাতে কোভিড-১৯ এর কারণে চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েছে। বিভিন্ন দেশের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, সংক্রমণের ভয়ে গর্ভবতী নারীরা তাদের স্বাস্থ্য সেবা নেওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। একই সাথে, মাতৃত্বকালীন পরিষেবাগুলোর ব্যবস্থা কমে যাওয়ায় গর্ভবতী নারীদের ঝুঁকির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেন্ট জর্জের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে গবেষণাটির প্রধান লেখক আসমা খলিল বলেন, “আমাদের গবেষণায় একটি বিষয় পরিষ্কার যে, মা ও শিশুদের যে মৃত্যুগুলো এড়ানো যেত, মহামারির প্রতিবন্ধকতার কারণে আমাদের সেই মৃত্যুগুলোর সম্মুখীন হতে হয়েছে।”
মেটা অ্যানালাইসটিতে ব্রাজিল, বটসওয়ানা, কানাডা, চীন, ডেনমার্ক, ভারত, ইসরায়েল, মেক্সিকো, নেপাল যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৭ টি দেশের গবেষণা পত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য এবং গাইনোকলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার অ্যান্ড্রে ক্রেঞ্জা বলেন, গবেষণার ফলাফল বলছে মা ও শিশুর জন্য নিরাপদ গর্ভাবস্থার সাম্প্রতিক উন্নতির বিপরীত দিকে হাঁটছে বিশ্ব।
সন্তান জন্মদান এবং প্রসবকালীন যত্নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষায় বিশ্ব অভাবনীয় অগ্রগতি লক্ষ্য করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে মনোযোগ ছিল গর্ভবতী নারী ও শিশুদের সেবার মান উন্নয়নের দিকে।
“বর্তমানে আমরা আবারও পেছনের দিকে ফিরে যাচ্ছি। নারীরা যেন নিজেদের এবং অনাগত সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পায় তা নিশ্চিত করুন। সামনের পথ অত্যন্ত কঠিন,” বলেন তিনি।
সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট