করোনার প্রভাব কাটিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি পুনরায় ভালো করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। তারা বলছে, ২০২১ অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) গড় প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। তারপরের ২০২২ অর্থবছরে একটু কমে গড় প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
বুধবার (৩১ মার্চ) ‘সাউথ এশিয়ান ইকোনমিকস বাউন্স ব্যাক বাট ফেস ফ্রাজিল রিকভারি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবেদনে বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে ভালো করবে মালদ্বীপ। তারপর বাংলাদেশ। তারপরের অর্থবছরেও সবচেয়ে ভালো করবে মালদ্বীপ, তারপর ভারত এবং তৃতীয় স্থানে চলে যাবে বাংলাদেশ।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ অর্থবছর (জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর) শেষে মালদ্বীপের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে মালদ্বীপের ধারেকাছেও নেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশ।
তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে (জুন-জুলাই) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। তারপরের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ দেশে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে ৬ দশমিক ২ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে (এপ্রিল থেকে মার্চ) ভারতের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ঋণাত্মক ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে তার পরের ২০২১-২২ অর্থবছরে (এপ্রিল-মার্চ) দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াবে দেশটি। এই অর্থবছরে তাদের প্রবৃদ্ধি হবে ১০ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
আফগানিস্তান ২০২১ অর্থবছরে (ডিসেম্বর থেকে ডিসেম্বর) জিডিপির প্রবৃদ্ধি করবে ১ শতাংশ এবং ২০২২ অর্থবছরে করবে ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
শ্রীলঙ্কার ২০২১ অর্থবছরে (জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর) জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২২ অর্থবছরে তা দাঁড়াতে পারে ২ শতাংশ।
ভুটানে ২০২১-২২ অর্থবছরে (জুলাই থেকে জুন) জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে হতে পারে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
নেপালে ২০২০-২১ অর্থবছরে (মধ্য জুলাই থেকে মধ্য জুলাই) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ৭, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
পাকিস্তানে ২০২০-২১ অর্থবছরে (জুলাই থেকে জুন) জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টিং স্কফার বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি পুনরায় ভালো করার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি। যদিও করোনা পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই। রিকভারির অবস্থা এখনো ভঙ্গুর। এ ক্ষেত্রে টিকা গুরুত্বপূর্ণ। সামনের দিনগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর টিকার ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন এবং এ ক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে এগোনো উচিত।’