প্রতিদিন নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সারাদেশে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কাতারের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা আহমেদ আল মোহাম্মদ। তিনি হামাদ মেডিকেল করপোরেশনের আইসিইউ-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
সোমবার তিনি বলেছেন, প্রথম দফা সংক্রমণ বা প্রথম ঢেউয়ের পর কাতারে করোনা সংক্রমণ উচ্চ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে। নতুন সংক্রমিতের মধ্যে বহু শিশু আছে, যাদের বয়স ১৪ বছরের নিচে। উল্লেখ্য, কাতারে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক অবস্থান করছেন।
দেশজুড়ে লকডাউন দেয়া হলে তাদের কি অবস্থা দাঁড়াবে তা নিশ্চিত নয়। তবে তাদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেতে পারে এমনটা আশঙ্কা করা যায়। কাতার টিভি’তে এক সাক্ষাৎকারে আহমেদ আল মোহাম্মদ বলেছেন, আইসিইউতে ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩।
কিন্তু এখন সেই সংখ্যা তিন শতাধিক। কয়েক মাসের মধ্যে এই সংখ্যা কিভাবে লাফিয়ে বেড়েছে সেদিকে দৃষ্টি দিন। তিনি আরো বলেছেন, এমনকি গত বছর করোনা মহামারির পিক সময়েও আমরা আইসিইউতে এত রোগী পাইনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
মঙ্গলবার সেখানে নতুন করে ৭২০ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছেন তিন জন। করোনা মহামারি শুরুর পর কাতারে কমপক্ষে ১৭ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২৮৯ জন।
আহমেদ আল মোহাম্মদ বলেন, গত গ্রীষ্মে আমরা যখন পূর্ণাঙ্গ লকডাউন দিয়েছিলাম তখন রাস্তাঘাট ছিল একেবারে ফাঁকা। মানুষজন বাড়িতে বসে কাজ করছিলেন। এবারও ভাইরাসের বিস্তারকে রোধ করতে সেটাই হবে উত্তম উপায়।
তিনি আরো বলেন, যতদিন মানুষে মানুষে দেখাসাক্ষাত হবে, কাজে যোগ দেবেন, কোনো অনুষ্ঠানে সমবেত হবেন, ততদিন এই ভাইরাসের বিস্তার অব্যাহত থাকবে। প্রথম করোনা ভাইরাসের ঢেউয়ের সময় আমরা এত মানুষ আক্রান্ত দেখতে পাইনি।
তিনি আরো বলেন, ২০২০ সালের মে মাসে প্রথম সংক্রমণের পিক সময়ে আমাদের আইসিইউতে ছিলেন মাত্র ২২০ জন রোগী। কিন্তু এবার তা অনেক বেড়েছে। এ থেকে পরিষ্কার হয় যে, মানুষজন অসুস্থ হচ্ছে এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে আরো কঠিন লক্ষণের মুখোমুখি হচ্ছে।
কাতারের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, বৃটিশ ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের ফলে কাতারে করোনা রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। গত সপ্তাহে শিক্ষা, অবসর, ব্যবসায়ী কর্মকা-ের মতো খাতে করোনা সংক্রান্ত ধারাবাহিক বিধিনিষেধ আরোপ করে কাতার। এমনকি বন্ধ করে দেয়া হয় জিম। রেস্তোরাঁয় সক্ষমতার ওপর বিধিনিষেধ দেয়া হয়।