মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। প্রিয়জনদের হারিয়ে দিশহারা পরিবারগুলো। গত শনিবার সশস্ত্রবাহিনী দিবসে গণন্ত্রপন্থীদের ওপর পাখির মতো গুলি চালিয়ে একদিনে দেড় শতাধিক আন্দোলকারীকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাযজ্ঞের পর নিন্দার ঝড় বইছে বিশ্বজুড়ে।
সোমবার ( ২৯ মার্চ ) সেই হামলার রেশ না কাটতেই ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় নামেন শত শত গণন্ত্রপন্থী। প্রতিবাদ জানান জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে। এদিনও বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। এরপরই প্রতিরোধ গড়ে তুলেন আন্দোলকারীরা। তৈরি করেন মানবদেয়াল। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর বারুদ আর গুলিতে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আন্দোলকারীরা।
শুধু বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি করেই ক্ষান্ত নেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে কারেন জাতিগোষ্ঠীর ওপর দমনপীড়নের পাশাপাশি চালানো হচ্ছে বিমান হামলা। জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিলেও পরে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় সে দেশের সরকার।
মিয়ানমারের চলমান সহিংসতা নিয়ে এতদিন কেবল পশ্চিমা দেশগুলো সোচ্চার থাকলেও এবার গণতন্ত্রপন্থিদের ওপর হামলার বিষয়ে উদ্বেগ জানালো জান্তা সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসা প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ চীন। এক সংবাদ সম্মেলেন সহিংসতা বন্ধে সব পক্ষকে শান্ত থাকার পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানান চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আশা করি সব পক্ষই শান্ত থেকে পরিস্থিতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। সহিংসতা ছড়িয়ে কেউ লাভবান হতে পারবে না। সংঘর্ষ, রক্তপাতের মাধ্যমে মিয়ানমারের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা যাবে না।
গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। ঐ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি মিয়ানমারের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে ক্রেমলিন। গেল পহেলা ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত শনিবারের হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সব ধরনের বাণিজ্যযুক্তি বাতিল করে ওয়াশিংটন।