রাজশাহীতে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের সিলিণ্ডার বিফোরণের পর আগুন ধরে ১৭ জন নিহতের ঘটনায় হানিফ বাসের চালক আব্দুল রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে পুঠিয়া উপজেলার মাহিন্দ্র বাইপাস থেকে কাটাখালি থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, গ্রেফতারকৃত বাস চালক আব্দুল রহিম পুঠিয়া উপজেলার বাড়ইপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।
তিনি আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহতের ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে হানিফ বাসের চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। কাটাখালি থানার এসআই নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১৭ জনকে হত্যা ও কয়েকজন জখমের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই মামলায় বাস চালক আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, নিহত ১৭ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমাগার থেকে শোকে হতবিম্বল স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এর পর লাশ নিয়ে তারা রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এদিকে, সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু আসলামকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। একইসঙ্গে তাদেরকে দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, নিহতদের দাফনের জন্য প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও লাশ তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুরে রাজশাহীর কাটাখালি থানার সামনে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষের পর সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মাইক্রোবাসে আগুন গেলে যায়। এতে হাইস মাইক্রোবাসের ১৭ যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান। ওই মাইক্রোবাসে ১৮ জন যাত্রী ছিলেন। আহত অবশিষ্টজন হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার নাম পাভেল (২৭)।
আর নিহতরা হলেন- রংপুরের পীরগঞ্জের ডারিকাপাড়ার অধিবাসী আহত পাভেলের বাবা মোখলেসুর রহমান (৪৫), মা পারভীন বেগম (৪০), রাঙ্গামাটি গ্রামের মো. সালাহউদ্দিন (৩৬), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার (২৫), তাদের ছেলে সাজিদ (৮), মেয়ে সাফা (২), শামসুন্নাহারের বড় বোন কামরুন্নাহার (৩৭), উপজেলা সদরের মো. ভুট্টু (৪০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (৪০), ছেলে ইয়ামিন (১৫), বড় মজিদপুরের ফুলমিয়া (৪০), তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫), ছেলে ফয়সাল (১৫) এবং মেয়ে সুমাইয়া (৮), সাবিহা (৩), দুরামিঠিপুরের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম (৪৬) এবং মাইক্রোবাসের চালক মো. হানিফ (৩০)। হানিফের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার পঁচাকান্দ গ্রামে।