spot_img

মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত ৭ বছরের শিশু

অবশ্যই পরুন

মিয়ানমারে এবার নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে সাত বছর বয়সী এক শিশু। মঙ্গলবার দেশটির দ্বিতীয় প্রধান শহর মান্দালয়ের শান মিয়া থাজি এলাকায় ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা।

নিহত ওই মেয়ে শিশুটির নাম খিন মিও শিট। বাড়িতে বাবার কোলে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয় সে। স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তার বাবাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিল, কিন্তু ভুলক্রমে সেই গুলি লাগে খিন মিও শিটের গায়ে।

গুলি লাগার পর প্রতিবেশী এবং উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের সহযোগিতায় দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে, কিন্তু হাসপাতলে পৌঁছানের পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খিনের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে খিনের ১৯ বছর বয়সী বড়ভাইকে আগেই গ্রেফতার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।

২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরবেলা মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অ্যং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি এবং তার দল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির বেশ কয়েকজন সদস্য। এদের মধ্যে সু চির মন্ত্রিসভার কয়েকজন মন্ত্রী, প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী ও পার্লামেন্ট সদস্যরাও রয়েছেন।

সেনাবাহিনীর অভুত্থানের অব্যবহিত পরই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন মিয়ানমারের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়সহ সারা দেশে শুরু হয় টানা বিক্ষোভ সমাবেশ-মিছিল ও অসহযোগ আন্দোলন।

প্রাথমিক পর্যায়ে বিক্ষোভ দমনে রাবারবুলেট, জলকামান ও লাঠিচার্জ ইত্যাদি ব্যবহার করলেও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রাণঘাতী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা সরকার।

দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার যদিও বলছে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১৬৪ জন মারা গেছেন; তবে মিয়ানমারে কারাবন্দিদের সহায়তা দানকারী বেসরকারি সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ (এএপিপিএজি) জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬১ জন।

শিশু অধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক বা শিশু রয়েছে।

খিন মিও শিটের মৃত্যুর পর এক বিবৃতিতে সেভ দ্য চিলড্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারে সাম্প্রতিক বিক্ষোভ পরিস্থিতে প্রতিদিনই নিহত হচ্ছে শিশুরা। এমনকি বাড়ি, যা একটি শিশুর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান হওয়ার কথা— সেখানেও তারা শঙ্কামুক্ত নয়। এই ঘটনাগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই।’

খিনের মৃত্যুর পর দেশটির জান্তা সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে তাদের মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি; তবে তাদের কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সূত্র: বিবিসি

সর্বশেষ সংবাদ

বিভক্ত হলে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হওয়ার পথ খুঁজে পাবে: জামায়াত আমির

দেশের মানুষ ৭ নভেম্বর ও ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ