বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে, আলোচনার সিংহভাগ জুড়ে থাকেন তিনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি লাইভ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। সেখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বেশ কয়েকজন পরিচালকের বিপক্ষে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনেছেন। এনিয়ে সরগরম গোটা ক্রিকেটাঙ্গন। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশি গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে সাকিবের কথা। তিনি হঠাৎ কেন অগ্নিমূর্তি ধারণ করেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাকিব নিজে।
ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, ‘আমি যা বিশ্বাস করি, তা-ই বলি। কী প্রতিক্রিয়া হবে, এ নিয়ে ভাবি না। আমি চিন্তা করলে বড় চিন্তা করি। আচ্ছা আপনিই বলেন, আমি যা বলেছি, তাতে কি আমার নিজের কোনো লাভ আছে? নিজের লাভ তো গাধাও বোঝে। আমি ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে কথাগুলো বলেছি। কারও যখন বলার সাহস নাই, আমিই না হয় বললাম। আমার ব্যক্তিগত লাভের জন্য তো বলি নাই। কেউ যদি এটা ভালোভাবে নিতে চায়, তা ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে। আমরা যদি ভালো করতে চাই, বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতি চাই, তাহলে তো আমি আমার কথায় কোনো সমস্যা দেখি না।’
সেই লাইভ অনুষ্ঠানে রীতিমত বোমা ফাটান সাকিব। জানান, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আর পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন ছাড়া কেউই ক্রিকেটের স্বার্থে কাজ করছেন না। ক্রিকেট বোর্ডের কার্যক্রম চলছে দায়সারাভাবে। এমন কি জাতীয় দলের পাইপলাইন শক্ত করার দায়িত্ব যাদের, সেই হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) উইনিটও ক্রিকেটার তৈরির কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারছে না।
মাঠের ক্রিকেটে যেমন একরোখা, তেমনই মাঠের বাইরে ঠোঁটকাটা স্বভাবের সাকিব। আগে-পিছে কি ঘটলো, সে সবের পরোয়া করেন না বাঁহাতি অলরাউন্ডার। প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় দলের ক্রিকেটার হয়ে বোর্ডের বিপক্ষে প্রকাশ্যে এভাবে মন্তব্য করতে পারেন সাকিব? সাকিব ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যা বলেছেন ভুল কিছু বলেননি তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বার্থেই কথাগুলো বলতে বাধ্য হয়েছেন। বাকিরা যেখানে টু শব্দটি করতে নারাজ, সেখানে কাউকে তো দায়িত্ব নিতে হবে।
ঠোঁটকাটা স্বভাব আর মাঠের ক্রিকেটে অশোভন আচরণের জন্য একাধিকবার শান্তি পেতে হয়েছে সাকিবকে। শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই নয়, ভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও নিষিদ্ধ করেছিল তাকে। কয়েকমাস আগেই সে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হয়েছেন তিনি। এবার বোর্ডের বিপক্ষে এমন বেফাঁস মন্তব্যের দায়েও নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসতে পারে সাকিবের উপর। তবে এসব নিয়ে একেবারেই ভাবনা নেই সাকিবের।
বর্তমানে ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা টাইগার অলরাউন্ডার জানান, ‘আমি এটা নিয়ে চিন্তিত না। আমার মনে হয় না, আমি খারাপ কিছু বলেছি। এটা আসলে কে কীভাবে নেয়, তার ওপর। ভালো ভাবে নিলে ভালো, আর কেউ যদি ইস্যু তৈরি করতে চায়, তাহলে ভিন্ন কথা। কেউ যদি আমার ২টা/৩টা প্রবলেমের কথা বলেন, আমি তা নিয়ে চিন্তা করব। ঠিক মনে হলে শোধরানোর চেষ্টা করব। আমার ছুটি নেওয়া নিয়ে কেউ একটার পর একটা ইন্টারভিউ দিয়ে যেতে পারবেন, আর আমি আমার কথাটা বলতে পারব না?’