পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার রাষ্ট্রপতি জন মাগুফুলি মারা গেছেন। বুধবার (১৭ মার্চ) দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান এ সংবাদ জানিয়েছেন। খবর- আল জাজিরার।
দীর্ঘ এক সপ্তাহ ধরে রাষ্ট্রপতি জন মাগুফুলির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ধোঁয়াশার পর মৃত্যুর খবর দেশটির টেলিভিশনে জানালেন ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিয়া হাসান। তার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে দেশটির দারুস সালাম শহরের হাসপাতালে মাগুফুলির মৃত্যু হয়েছে। গত এক দশক ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।
সামিয়া হাসান বলেন, গত ৬ মার্চ মাগুফুলি জাকায়া কিকওয়েট কার্ডিয়াক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। তবে সে সময় তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। পরে অসুস্থ বোধ করলে ১৪ মার্চ তিনি পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ২০১৫ সালে জন মাগুফুলি প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন। সেসময় তিনি দেশটিতে অবকাঠামোগত উন্নয়নেরও প্রতিশ্রুতি দেন। বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি দ্বিতীয় বার জয় লাভ করেন। তার দলের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ রয়েছে।
করোনা সংক্রমণের পর জন মাগুফুলি এর ভয়াবহতাকে পাত্তা না দিয়ে জনগণকে প্রার্থনা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সেসময় তিনি শ্বাস ভরে ফুটানো পানির বাষ্প গ্রহণ করতে বলেন এবং স্থানীয় টোটকার সাহায্যে করোনা থেকে বাঁচার পরামর্শ দেন। লকডাউন এবং মাস্ক পরারও কোনো প্রয়োজন নেই বলেন তিনি।
২০২০ সালের এপ্রিলে তানজানিয়া করোনা সংক্রমণের হিসেব প্রকাশ বন্ধ করে দেয়। জুনে ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপে তানজানিয়া করোনামুক্ত হয়েছে বলে দাবি করেন মাগুফুলি। তবে আধা-স্বায়ত্তশাসিত জানজিবারের ভাইস প্রেসিডেন্ট করোনায় মারা গেলে যখন মাগুফুলি জনসম্মুখে আসেন তখন সংক্রমণ বাড়ছে বলে মেনে নেন।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মাগুফুলি সর্বশেষ জনসম্মুখে আসেন। সেসময় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে, তিনি অসুস্থ এবং সম্ভবত আর সুস্থ হবেন না। তবে সরকারের উচ্চ মহল থেকে মাগুফুলির অসুস্থতার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। করোনার কারণে হওয়া অজ্ঞাত অনেক মৃত্যুর জন্য মাগুফুলির করোনাকে পাত্তা না দেওয়ার বিষয়টি দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।