পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর পূর্বের শহর মার্দানের এক নববধূ তার হবু স্বামীর কাছে তাদের বিয়ের পূর্বে এক বিচিত্র শর্ত দিয়েছেন। পাকিস্তানের ওই অঞ্চলের বিয়েতে নববধূকে যে আবশ্যকভাবে যা দিতে হয় তা ‘হক মেহের’ নামে পরিচিত। এটা টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, গৃহস্থালি সামগ্রী, ফার্নিচার বা অন্য কোনো সম্পদ আকারে দিতে হয়। মার্দানের নায়লা সামাল একজন তরুণ লেখক যিনি আরেক লেখককে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। আর তিনি এমন কিছু চাচ্ছেন যা এসব বস্তুগত সম্পদ থেকেও বেশি মূল্যবান। তিনি এক লাখ টাকার বই চেয়েছেন। -নিউজওয়ালা
এ যৌতুক বরকে তার হবু নববধূকে দিতে হয় তার পাণিপ্রার্থনার জন্য। এ ‘হক মেহেরের’ ওপর একমাত্র মেয়েদেরই অধিকার আছে। ইসলামী আইন ও প্রথা অনুসারে এ যৌতুক অবশ্যই দিতে হয়। তিনি প্রথাগত চাহিদা অনুসারে স্বর্ণ, টাকা অথবা সম্পদ চাচ্ছেন না। চেয়েছেন বই। একটি কেকর্ড করা ভিডিওতে তরুণীকে বিয়ের সাঁজে চমৎকার সুন্দর দেখাচ্ছিল। তিনি সোফার ওপর বসে ছিলেন তার পিছনে ছিল বুক সেলফ। ওই ভিডিও বার্তায় তিনি ব্যাখা করেছেন তিনি কেন এমন অদ্ভূত ‘হক মেহের’ (যৌতুক) চেয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এ সময়ে হক মেহেরের দামি জিনিসপত্র সংগ্রহ করা সবার জন্যই কষ্টকর। কারণ, এখন মুদ্রাস্ফীতি চলছে। এছাড়া এর মাধ্যমে তিনি এ প্রথার অবসানও চাচ্ছেন। এ কথার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যায় তিনি আরো বলেন, ‘আমি বই চাচ্ছি। এর প্রথম কারণ, সবকিছুই এখন খুব ব্যয়বহুল। আমরা এসব জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে পারব না মুদ্রাস্ফীতির জন্য। এছাড়া আমি এমনটা করেছি এ কারণে যে আমাদের এ সকল প্রথার অবসান করতে হবে। এসব প্রথার কারণে আমাদের জীবন খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
তার মতে, প্রত্যেক নারী স্বর্ণ ও অর্থ চায়। কিন্তু, একজন লেখক হিসেবে আমি বই চেয়েছি। যদি একজন লেখক হিসেবে আমি বইয়ের মূল্য না দেই, তাহলে আমি কেমন করে আশা করতে পারি যে অন্য সাধারণ মানুষেরাও বইয়ের মূল্য দেবে। হক মেহেরের জন্য আমি যে বই চেয়েছি তার মূল কারণও এটা। আমাদের নিজেদেরই বইয়ের মূল্য দিতে হবে। যেমন আমরা অন্যদের বইয়ের মূল্য দিতে বলি। তার এ চিন্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের টুইটার প্লাটফর্মে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।