কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু দেশপ্রেমিকের যে অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, সেটা সর্বকালে শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় সারা পৃথিবীর জন্য অনুকরণীয়-অনুস্মরণীয়। আমরা এখনও বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শকে অনুসরণ করে চলছি তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
তিনি বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কেন্দ্রীয় আওয়ামী পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯-এ ও আমরা বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেমকে অনুসরণ করেছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ কোভিড-১৯-এ জয়লাভ করেছে।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। পৃথিবীর মানচিত্রে একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাঙালি জাতি পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর মানুষ বাঙালি জাতিকে চিনতে ও জানতে পেরেছে। আজকে সেই ঐতিহাসিক দিন। এদিনে আমাদের প্রত্যাশা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন নিয়ে বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি শতায়ু হতেন তাহলে এ দেশ অনেক আগেই উন্নতির স্বর্ণশিখরে পৌঁছে যেতো। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ স্বপরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতির যে পথ অবরুদ্ধ হয়েছিল। তারই কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক যুদ্ধে মধ্যদিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় অর্জন হলো স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা তারই নেতৃত্বে তার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সারা বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। আজকের এদিন শুধু বাংলাদেশের মানুষের নয় সারা বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। এই দিনটির জন্য আমরা ধন্য।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১-তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় রাষ্ট্রপতির পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাউদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিউগলের সুর বেজে ওঠে এবং তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল তাদের অনার গার্ড প্রদান করে।
পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবদ্বয় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহাপাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন।
এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম মেম্বার লে, কর্ণেল (অব,) মুহাম্মদ ফারুক খান, এমপি’র নেতৃত্বে দলীয় সভাপতির পক্ষে ও পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
পরে নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করেন।
এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ,ফ,ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের বকুল তলা চত্বরে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী অনুশা এঞ্জেল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় শিশু সমাবেশ।
সমাবেশে ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শিশুদের উদ্দেশ্যে তিনি ভাষণ দেন। পরে তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দরা, এমপি শিশুদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১-তম জন্মদিনের কেক কাটেন। এর আগে তিনি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুর ইসলাম, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।