spot_img

সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে জোড়া মাথার সেই রাবেয়া-রোকাইয়া

অবশ্যই পরুন

 দীর্ঘ ও সফল চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে জোড়া মাথার জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়া। রোববার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাবেয়া-রোকাইয়ার বাড়ি ফিরে যাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকার সিএমএইচ-এ ‘মুজিব শতবর্ষে জোড়া মাথা থেকে মুক্তি পাওয়া রাবেয়া-রোকেয়ার শুভ গৃহ প্রত্যাবর্তন’ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে ২০১৯ সালের ০১-০৩ আগস্ট রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৩৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে জোড়া মাথার জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়ার খুলি ও ব্রেন সফলভাবে আলাদা করা হয়। এ ধরনের অপারেশন সারা বিশ্বেই বিরল এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় প্রথম। অপারেশন পরর্বতী সাফল্যও বিশ্বে খুব বেশি নয়।

জটিল এ অপারেশনের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ফ্রিডম’। এই অপারেশনে ৩৪ জন হাঙ্গেরিয়ান সার্জিক্যাল টিম এবং হাঙ্গেরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে সিএমএইচের নিউরো অ্যানেসথেসিওলজিস্ট, নিউরো ও প্লাস্টিক সার্জনসহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট, হার্ট ফাউন্ডেশন, নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের শতাধিক সার্জন ও অ্যানেসথেসিওলজিস্ট অংশ নেন।

মূল অপারেশনের পরে বিভিন্ন ধাপে শিশু দু’টির আরও বেশ কয়েকটি অপারেশন সম্পন্ন হয়। সবশেষ ২০২০ এর ২৮ অক্টোবর তাদের ৪র্থ ধাপের অপারেশন হয়। জন্মগত অন্য কিছু ত্রুটি ছাড়া শিশু দু’টি বর্তমানে প্রায় সুস্থ আছে।

২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনার চাটমোহরের আটলংকা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন দম্পতির ঘরে জোড়া মাথা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়া। প্রতি পাঁচ থেকে ছয় মিলিয়ন শিশুর মধ্যে একজনের এ ধরনের বিরল রোগ হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটিকে ‘ক্রেনিয় পেগাজ’ বলে।

শুরুতে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন রাবেয়া-রোকাইয়া। সেখানে দুই স্তরে তাদের মস্তিষ্কের রক্তনালিতে অপারেশন করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শিশু দু’টিকে হাঙ্গেরি পাঠানো হয়। হাঙ্গেরিতেও শিশু দু’টির ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৮টি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়ার পুরো চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া চিকিৎসায় সার্বিক সহযোগিতা দেয় হাঙ্গেরির দাতব্য সংস্থা অ্যাকশন ফর ডিফেন্স পিউপল ফাউন্ডেশন।

প্রধানমন্ত্রী রাবেয়া-রোকাইয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তারা কেমন আছে জানতে চেয়ে বলেন, কেমন আছো?

রাবেয়া-রোকেয়ার একজন বলেন, হ্যাঁ, ভালো, তুমি কেমন আছো?

জবাবে প্রধানমন্ত্রী আবারও বলেন, ভালো।

বাড়ি ফিরতে ফেরে খুশি কিনা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।

তারা মাথা নেড়ে খুশির কথা জানায়।

বক্তব্যে রাবেয়ার রোকেয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ রাবেয়া-রোকাইয়া বাড়ি ফিরে যাচ্ছে, তাদের বাবা-মায়ের কোলে ফিরে যাচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল চিকিৎসা শেষে রাবেয়া-রোকাইয়া বাড়ি ফিরে যাচ্ছে এটা সত্যিই খুব আনন্দের, অন্য রকম অনুভূতি। মুজিব শতবর্ষে রাবেয়া-রোকেয়ার শুভ গৃহ প্রত্যাবর্তন সবার জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের। আমি তাদের পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি।

অনুষ্ঠানে রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা-মা, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সামন্ত লাল সেনসহ সামরিক ও বেসামরিক চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাবেয়া রোকাইয়ার মা তাদের সন্তানের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্টদের চিকিৎসদের আন্তরিক ধন্যবাদ দেন ও তাদের দোয়া করেন।

সর্বশেষ সংবাদ

কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না নয়: আইজিপি

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলাসমূহ যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ