পশ্চিম এশিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় দেশ লেবাননের আইনসভার সদস্যরা এখন থেকে নিয়ম মেনে করোনা টিকা নেবেন। দেশটিতে গণটিকাদান কর্মসূচির তালিকায় যাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে আর ‘টপকানোর’ চেষ্টা করবেন না তারা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়ে শনিবার লেবাননের আইনসভার ডেপুটি স্পিকার ইলি ফার্জলি বলেছেন, ‘লেবানন আইন পরিষদের আর কোনও সদস্য গোপনে করোনা টিকা নেবেন না। টিকাদান কর্মসূচির অগ্রাধিকার তালিকা মেনেই তারা টিকা নেবেন। পার্লামেন্টে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
‘যারা ইতোমধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে ফেলেছেন, তাদের এখন অপেক্ষা করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী যখন তাদের ডাক আসবে, টিকা নেবেন তারা।’
বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায়তায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে লেবাননে। টিকা প্রদানে অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হয়েছে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রবীণ মানুষদের।
কিন্তু এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকেই লেবাননের পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে লুকিয়ে টিকা নেওয়া হিড়িক পড়ে যায়। এ পর্যন্ত দেশটির প্রায় এক ডজন পার্লামেন্ট সদস্য নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে ফেলেছেন।
এই তালিকায় রয়েছেন খোদ ডেপুটি স্পিকার ইলি ফার্জলিও। দেশের একজন প্রবীন নাগরিক হিসেবে টিকা গ্রহীতার তালিকায় এমনিতেই ওপরের দিকে থাকার কথা ৭০ বছর বয়স্ক ফার্জলির; কিন্তু নিয়মনীতি মানেননি তিনিও।
মহামারি শুরু পর থেকেই অর্থনৈতিক সমস্যায় ধুঁকছে লেবানন। তার ওপর এমপিদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে সেখানে; অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংকও। সম্প্রতি বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই দাতা সংস্থার পক্ষ থেকে লেবানন সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছে, অনিয়ম বন্ধ না করলে আর্থিক সহযোগিতা স্থগিত করে দেওয়া হবে।
মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত লেবাননে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ১১ হাজার এবং এ রোগে দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ২৭৮ জনের।
লেবাননের মোট জনসংখ্যা ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৪০৮। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ১৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে পর্যন্ত প্রায় এক লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা গেছে।
সূত্র: মিডলইস্ট মনিটর